পূর্বশত্রুতার জেরে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই মাদ্রাসাছাত্র নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের পূর্ব ইলশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন ওই গ্রামের নেছার আহমেদের ছেলে খালেদ বিন ওয়ালিদ (২৩) ও আবু সালেকের ছেলে হাফেজ মো. ইব্রাহিম (২২)। দু'জনই পটিয়া উপজেলার এক মাদ্রাসা থেকে সম্প্রতি কামিল পাস করেন। করোনা দুর্যোগের কারণে তারা নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইলশা গ্রামের দুই ইটভাটা মালিক নুরুল আবছার ও জয়নাল আবেদীন ঝুন্টুর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এই নিয়ে বেশ কয়েকবার উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়। সম্প্রতি পুলিশের উপস্থিতিতে দু'পক্ষের বৈঠক করে মীমাংসাও করে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার রাতে জয়নাল আবেদীন ঝুন্টুসহ অন্যরা মসজিদ থেকে তারাবি নামাজ পড়ে বের হন। এ সময় ওত পেতে থাকা সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা ঝুন্টুকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। ঝুন্টু প্রাণে বেঁচে গেলেও তার দুই চাচাতো ভাই হাফেজ খালেদ বিন ওয়ালিদ ও হাফেজ মো. ইব্রাহিম গুলিবিদ্ধ হন। আশপাশে থাকা লোকজন দ্রুত তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক খালেদকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত ইব্রাহিমকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মারা যান তিনিও।

গতকাল সকালে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) আফরুজুল হক টুটুল, সহকারী পুলিশ সুপার (আনোয়ারা সার্কেল) মফিজ উদ্দিন, বাঁশখালী থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদারসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা।

নিহত খালেদের মা শাহেদা বেগম বলেন, 'নুরুল আবছারের লোকজন আমার ও আমার দেবরের ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে এ খুনের বিচার চাই।'

এ ঘটনায় বক্তব্য নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলে দিদারুল আলম ঝুন্টু ও নুরুল আবছারের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও বন্ধ পাওয়া যায়। বাড়িতে গিয়েও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।

বাঁশখালী থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে এ হত্যাকা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এরই মধ্যে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। অপরাধী যেই হোক, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।