মানবতার ডাকে জীবন বাজি রেখে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সবাইকে ছেড়ে করোনাভাইরাস মোকাবিলা করতে রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়েছিলেন তিনি। সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। প্রতিদিনই অনেক রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ করে তুলছিলেন। তবে রোগীরা সুস্থ হয়ে উঠলেও একপর্যায়ে নিজের শরীরেই কভিড-১৯ এর নানা উপসর্গ দেখা দেয়। একপর্যায়ে নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয় করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব। শেষ পর্যন্ত নিজের ইচ্ছাশক্তির কাছেই হারতে হলো করোনাকে!

এতক্ষণের এই গল্প চট্টগ্রামের তরুণ চিকিৎসক করোনাযোদ্ধা আসিফুল হকের। রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন তিনি। তবে অদম্য ইচ্ছাশক্তি দিয়ে করোনাকে পরাজিত করে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। নিজে জয়ী হয়ে এখন অন্য রোগীদের করোনাযুদ্ধে জয়ী করতে আবারও মিশনে নেমেছেন এই করোনাযোদ্ধা। তাই সুস্থ হয়ে আবারও ফিরেছেন কর্মস্থলে।

রোগীদের সেবায় নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন আবারও। রোগীদের প্রতি তার এমন ভালোবাসা নজর কেড়েছে সবার। হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্কসহ ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) পরে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন তিনি। আক্রান্ত রোগীর পরিবারের সদস্যদের মনোবল বাড়াতে ছুটে যাচ্ছেন বাড়ি বাড়ি। শোনাচ্ছেন করোনাকে জয় করার নিজের অভিজ্ঞতার গল্প। দিচ্ছেন নানা দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ।

মুঠোফোনে নিজের করোনা জয়ের গল্প সমকালের কাছে তুলে ধরেন ডা. আসিফুল হক। বলেন, 'মানুষের জীবন বাঁচানোর ব্রত নিয়েই চিকিৎসা পেশায় এসেছি। প্রতিদিন অনেক রোগীকে সুস্থ করে তুলতে গিয়ে নিজে কখন যে আক্রান্ত হয়ে যাই বুঝতে পারিনি। করোনা শনাক্ত হওয়ার পরও ভেঙে পড়েনি। মনে সাহস রেখেছিলাম। একমুহূর্তের জন্যও ইচ্ছাশক্তিকে হারতে দেয়নি। বিশ্বাস রেখেছি সুস্থ হয়ে আবারও রোগীর সেবায় নিজেকে উজাড় করে দেব।'

ডা. আসিফুল বাঁশখালী উপজেলার বৈলছড়ি গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মাহমুদুল হকের ছেলে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আসিফ ৩৯তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে গত বছরের শেষের দিকে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন।