কালবৈশাখীর তাণ্ডবে নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলায় আম,গাছপালা, বাড়িঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যার দিকে মাত্র চার মিনিটের এ তাণ্ডবে জেলার মান্দা, নিয়ামতপুর, পোরশা, সাপাহার, পত্নীতলা ও বদলগাছী উপজেলা এলাকায় এ ক্ষয়ক্ষতি হয়। 

তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপণ করা না গেলে এলাকাবাসীর তথ্যমতে, এসব এলাকার দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি ও বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিনের চালা উড়ে গেছে, ভেঙে পড়েছে ৩০ থেকে ৪০টি বৈদুতিক খুঁটি, উপড়ে পড়েছে অসংখ্য গাছপালা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চলতি মৌসুমের আমের। ঝড়ে বিধস্ত এলাকাগুলোর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলেও এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন। 

পোরশা উপজেলা সদরের মোবারক হোসেন প্রতিবন্ধী স্কুলের প্রধান শিক্ষক মওদুদ আহমেদ জানান, ঝড়ে তার স্কুলের ৩টি কক্ষের টিনের চালা উড়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে শিক্ষা উপকরণেরও। এছাড়া ওই উপজেলার প্রায় অর্শত ঘরবাড়ির চালা উড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন বাগানে প্রচুর আম ঝড়ে পড়েছে।

মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, 'ঝড়ে মান্দায় বেশকিছু ঘরবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিনের চালা উড়ে গেছে এবং প্রায় অধর্শত বৈদুতিক খুঁটি উপড়ে গেছে। আমরা প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করার চেষ্টা করছি।' 

এদিকে সুপার সাইক্লোন আম্পানে জেলার আম বাগানগুলোর প্রায় ৩০ থেকে ৪০ ভাগ আম ঝড়ে পড়ে। আজকের কালবৈশাখী ঝড়েও বাগানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, তাদের কাছে পাওয়া খবর অনুযায়ী ঝড়ে পোরশায় ১০ হাজার হেক্টর আম বাগানের ৩ থেকে ৫ শতাংশ আম ঝরে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো তারা নিরূপণ করতে পারেননি।

আকস্মিক এই ঝড়ের কারণে আমের ক্ষতি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জেলার আম চাষীরা। নওগাঁয় এ বছর প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমের চাষ করা হয়েছে। জেলায় এ বছর আম উৎপাদন হওয়ার কথা প্রায় ৩ লাখ মেট্রিক টন। তবে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে মুকুল কম আসায় এবং আম্পান ও কালবৈশাখীর কারণে আম ঝড়ে পড়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক আম উৎপাদন হবে বলে মনে করছেন আমচাষী ও বাগান মালিকরা।