লিবিয়ায় মানব পাচারকারীদের হাতে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার জুয়েল হাওলাদার নিহত হওয়ার ঘটনায় তার বাবা রাজ্জাক হাওলাদার বাদী হয়ে স্থ‌ানীয় জুলহাস সরদারসহ ৪ দালালের নামে মানবপাচার আইনে মামলা করেছেন। রোববার সন্ধ্যায়  রাজৈর থানায় মামলাটি করা হয়। জুয়েল হাওলাদার মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

সম্প্রতি লিবিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মিজদায় ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ জনকে গুলি করে হত্যা করে মানব পাচারকারীরা। তাদের মধ্যে মাদারীপুরের ১১ যুবক নিহত ও চারজন আহত হয়।

স্থানীয়রা জানান, লিবিয়ায় হতাহতের খবর পেয়ে শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের মজিদ শেখের ছেলে দালাল জুলহাস শেখের বাড়িতে হামলা করে নিহত যুবকদের অভিভাবক ও এলাকাবাসী। খবর পেয়ে রাজৈর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। 

নিহত জুয়েল হাওলাদারের বাবা রাজ্জাক হাওলাদার ও মা রহিমা বেগম বলেন, 'আমাদের ছেলেসহ রাজৈরের বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকজনকে লিবিয়ায় পাঠানোর কথা বলে দালালচক্র তিন-চার মাস আগে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৪/৫ লাখ টাকা নিয়েছে। এরপর লিবিয়ার বেনগাজীর এক গ্রামে আটকে রেখে তাদের ওপর নির্যাতন শুরু করে এবং নির্যাতনের ভয়েজ রেকর্ড পাঠিয়ে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করে পাচারকারীরা। আমরা হোসেনপুর জুলহাস শেখ নামের ওই দালালের বাড়িতে গিয়ে ১০ লাখ টাকা দিয়ে আসি। এরপর শুনি, লিবিয়ায় গুলি করে অনেক বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলেকেও পাচারকারীরা হত্যা করেছে।'

একই গ্রাম থেকে পাচারের পর নিখোঁজ মানিক হাওলাদারের বাবা শাহ আলম হাওলাদার বলেন, 'আমার ছেলে মানিককে লিবিয়া নেওয়ার কথা বলে দালাল জুলহাস আমার কাছ থেকে প্রথমে ৪ লাখ টাকা নিয়েছে। পরে ছেলেকে বেনগাজী আটকে রেখে ভয়েজ রেকর্ড পাঠিয়ে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। আমি আমার ছেলেকে আনতে জুলহাসের বাড়ি গিয়ে টাকা দিয়ে আসি।'

রাজৈর থানার ওসি শওকত জাহান বলেন,'লিবিয়ায় লোক পাঠানোর ঘটনায় রাজৈরের দালাল জুলহাস শেখসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। করোনা উপসর্গ থাকায় জুলহাস শেখকে মাদারীপুর সদর হসাপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি রাখা হয়েছে।'