ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে পুলিশের সামনে দু'পক্ষের সংঘর্ষে স্কুলছাত্রসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ ও কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। বুধবার দুপুরে বাস্তা ইউনিয়নের বাঘাপুর ভাওয়ারভিটি এলাকার সামসু ফিলিং স্টেশনের কাছে এ ঘটনা ঘটে।  

এ ঘটনায় স্কুলছাত্র আকিব হোসেনের মাথায় ৯টি গুলি লেগেছে। সংকটপন্ন অবস্থায় তাকে রাজধানীর পান্থপথ ইউনিক হেলথ হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ রাজমিস্ত্রী আব্দুস কুদ্দুস ও মো. আল-আমিনকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের দু'জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। 

এ সময় পুলিশ ধাওয়া দিয়ে সামসু ফিলিং স্টেশনের মালিক হারুন-অর-রশিদকে আটক করে এবং তার কাছ থেকে একটি দুই নালা বন্দুক উদ্ধার করে।

স্থানীয়রা জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দু'পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ সময় বাঘাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আকিব হোসেন রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। সংঘর্ষকালে এলোপাতাড়ি চালানো গুলি তার মাথায় এসে লাগে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে রাজধানীর পান্থপথ ইউনিক হেলথ হসপিটালে নিয়ে ভর্তি করেন। তার মাথায় ৯টি গুলি লেগেছে। 

আকিব হোসেননের বাবা আলী আকবর হোসেন বলেন, 'সংঘর্ষকালে সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে গুলি ছোড়ে। এ সময় আমার ছেলের মাথায় গুলি লাগে। ওর অবস্থা খুবই খারাপ।' 

জালাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মালিক মো. জালাল মিয়া বলেন, 'সামসু ফিলিং স্টেশনের মালিক হারুন-অর-রশিদের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে জমি নিয়ে আমার সঙ্গে বিরোধ চলছিলো। সকাল থেকে হারুন ভাড়াটে সন্ত্রাসীসহ অস্ত্র নিয়ে ফিলিং স্টেশনে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে আমার কারখানায় হামলা চালায় তারা। এ সময় স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এক পর্যায়ে পুলিশের উপস্থিতিতে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে তারা। এ সময় পুলিশ নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রামের ভেতর চলে যায়। পরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা থেকে পুলিশ ফোর্স এসে সামসু ফিলিং স্টেশন ঘেরাও করে এবং পালানোর সময় হারুন অর রশীদকে একটি দুই নালা বন্দুকসহ আটক করে।

এদিকে সামসু ফিলিং স্টেশনের মালিক পক্ষের দাবি, সংঘর্ষে হারুন- অর- রশিদ, তার ছেলে মেহেদি হাসান হিরন, মেয়ের জামাই অ্যাডভোকেট নুরুল আলম, ম্যানেজার মো. হাবিবুর রহমান, মো. ইমরান হোসেন ও শাহিন আহমেদ আহত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এ ব্যাপারে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহজামান জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দু'পক্ষের সংঘর্ষকালে একপক্ষের গুলিতে তিনজন আহত হয়েছে। স্কুলশিক্ষার্থী আকিব হোসেনের অবস্থা সংকটাপন্ন। ঘটনাস্থল থেকে সামসু ফিলিং স্টেশনের মালিক হারুন-অর-রশীদকে একটি দুই নালা বন্দুকসহ আটক করা হয়েছে। ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) রামনন্দ সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

স্থানীয় বাস্তা ইউপি চেয়ারম্যান হাজি আশকর আলী বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে মীমাংসা হয়েছিল। তবে ফিলিং স্টেশনের মালিক আমাদের সিদ্ধান্ত মানেননি। এরপর দুপুরে দু'পক্ষের সংঘর্ষ হয়।