কুড়িগ্রামে আরও ৮ জন করোনায় আক্রান্ত, পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যু

কুড়িগ্রামে পুলিশ সদস্য, ডিএসবি সদস্য, সিনিয়র স্টাফ নার্স ও শিশুসহ নতুন করে আরও ৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্তহয়েছেন। ঢাকার শেরে বাংলা নগরে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ল্যাবরেটরি মেডিসিন এন্ড রেফারেল সেন্টার থেকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাদের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ এসেছে বলে ই-মেইলে জানানো হয়। 

এদিকে এই নমুনা পরীক্ষায় কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইনে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক (সশস্ত্র) আব্দুল জলিল সরদারের (৫৫) করোনা পজেটিভ বলে রিপোর্ট এসেছে। এই রিপোর্ট আসার আগে মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে বগুড়ার জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান।

জেলা পুলিশ অফিস সূত্রে জানা গেছে, পরিদর্শক আব্দুল জলিল সরদার কিছুদিন আগে জ্বরে আক্রান্ত হলে তার নমুনা সংগ্রহ করে তাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল।  এরপর কিছুটা সুস্থ হলে বগুড়ায় তার পরিবারের কাছে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে পুলিশ বিভাগের অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে তার পরিবারের কাছে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় আবারো অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম জানান, গত ৩১ মে আব্দুল জলিল সরদারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। মঙ্গলবার মধ্যরাতে তার নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ এসেছে। 

এছাড়া এই উপজেলার খলিলগঞ্জ এলাকার ৮ বছর বয়সী কন্যা শিশু এবং জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত একজন ২৪ বছর বয়সী সিনিয়র স্টাফ নার্সের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ এসেছে।

চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম জানান, এই উপজেলায় ৪১ বছর বয়সী একজন ডিএসবি সদস্য এবং কিসামত বানু বালাবাড়ি গ্রামের ৫৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ এসেছে।

ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সাজ্জাদ মো. সায়েম জানান, এখানে থানায় কর্মরত ৩৫ বছর বয়সী পুলিশ সদস্যের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ এসেছে।

এছাড়া ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা এলাকার অধিবাসী ৩৫ বছর বয়সী একজনের ফলাফল পজেটিভ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী লাইব্রেরিয়ান।

এদিকে রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহিনুর রহমান সরদার জানান, এই উপজেলার উমর মজিদ ইউনিয়নের ঘুমারু ভীমশীতলা গ্রামে ৫৮ বছর বয়সী এক বৃদ্ধার নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ এসেছে। ওই বৃদ্ধাসহ তার পরিবারের ৪ জনের গাজীপুর থেকে আসার পর গত ৩১ মে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।

তিনি আরও জানান, এই পস্থিতিতে বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে ওই বৃদ্ধার বাড়িসহ আশেপাশের ৭টি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

এসময় ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকলিমা বেগম ও থানার অফিসার ইনচার্জ রাজু সরকার উপস্থিত ছিলেন।

এ প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান নতুন করে ৮ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ আসার কথা স্বীকার করে বলেন, জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯০ জনে। তাদের মধ্যে ৫৭ জন সুস্থ হয়েছেন।