- সারাদেশ
- রোজিনাকে খুন স্বামীর বাড়িতে, লাশ ফেলা হয় বাবার বাড়ির পাশে: পুলিশ
রোজিনাকে খুন স্বামীর বাড়িতে, লাশ ফেলা হয় বাবার বাড়ির পাশে: পুলিশ
নিহত রোজিনা
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানা পুলিশ গৃহবধূ রোজিনা হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘন্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছে। রোজিনাকে তার স্বামীর বাড়িতেই শ্বাসরোধে হত্যার পর পেটে ছুরিকাঘাত করেন স্বামী মেহেদী হাসান। এরপর তার লাশ বাবার বাড়ির পাশের রাস্তায় ফেলে রাখা হয়।
পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি ও মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। নিহত গৃহবধু রোজিনার স্বামী মেহেদী হাসান (৩২) ও সতিন নূরজাহান আখতার আঙ্গুরকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব কথা জানিয়েছেন।
গত শুক্রবার রাতের এ ঘটনায় শনিবার রাতে নিহত রোজিনার বাবা মকবুল হোসেন বাদী হয়ে জামাই মেহেদী হাসান ও তার প্রথম স্ত্রী নূরজাহান আখতার আঙ্গুরকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মেহেদী হাসানের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন রোজিনা। মেহেদীর দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি তার প্রথম স্ত্রী নূরজাহান আখতার আঙ্গুর জানার পরে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এক পর্যায়ে মেহেদী তার দ্বিতীয় স্ত্রী রোজিনাকে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ কথা জানতে পারেন রোজিনা। তাই তিনি মুঠোফোনে তার স্বামীকে তাদের বিয়ের কাবিননামার নকল তোলার বিষয়টি জানান। কিছুক্ষণ পরে মেহেদী তার স্ত্রী রোজিনার সঙ্গে মুঠোফোনে দীর্ঘক্ষণ কথাবার্তা চলছিল। একপর্যায়ে রোজিনার মুঠোফোন নম্বর ব্লাক লিস্টে রেখে রিংটোন বন্ধ করে রাখেন মেহেদী। এরপর রোজিনা স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে গভীর রাতে একটি ছুরি সঙ্গে নিয়ে একাই বাবার বাড়ি থেকে হরিসারা গ্রামে স্বামীর বাড়িতে যান।
পুলিশের জিঙ্গাসাবাদে গ্রেফতারার জানায়, রোজিনা বাড়িতে ঢুকেই প্রথম স্ত্রীর সামনেই মেহেদীর সঙ্গে ঝগড়া শুরু করেন। এক পর্যায়ে স্বামীর ওপর চড়াও হয়ে ছুরিঘাত করার চেষ্টা করেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছুরির আঘাতে সামান্য জখম হন মেহেদী। এতে রোজিনার ওপর তার সতিন নূরজাহান প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হন। পরে মেহেদী ও তার প্রথম স্ত্রী নূরজাহান মিলে রোজিনার গলা চেপে ধরেন। কিছুক্ষণ পর রোজিনা নিস্তেজ হয়ে মাটিতে পড়ে যান। তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে পেটে ছুরিকাঘাত করেন মেহেদী। এর পর মেহেদী ও তার প্রথম স্ত্রী নূরজাহান তাদের নিজের অটোরিকশায় লাশটি তুলে নিয়ে ওই রাতেই রোজিনার বাবার বাড়ির পাশের রাস্তায় ফেলে রেখে যান।
আক্কেলপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম মালিক সাংবাদিকদের বলেন, নিহত রোজিনার লাশ উদ্ধারের পূর্বেই সন্দেহভাজন হিসেবে প্রথমে তার স্বামী মেহেদী হাসান ও তার প্রথম স্ত্রী নূরজাহানকে আটক করে থানায় আনা হয়। তাদের দু ‘জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারা দু’জনই হত্যার দায় স্বীকার করে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন। এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়েছে।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ওবায়েদ সাংবাদিকদের বলেন, রোজিনা হত্যাকাণ্ডের রহস্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উদঘাটন করা হয়েছে। স্বামী-সতিন মিলে রোজিনাকে হত্যা করেছেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি ও মুঠোফোন মেহেদী হাসানের বাড়ি থেকে জব্দ করা হয়েছে। রোববার সকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন