বহুল আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে ৯১ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে নগরীর ধনিয়ালাপাড়ার মেসার্স মেগা মোটর্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ডবলমুরিং থানায় মামলাটি দায়ের করেন মো. সাইফুদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ী। 

মামলায় সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদ ছাড়াও মো. শহীদুল্লাহ নামের ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার এক ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে। মো. সাহেদ ওই ব্যবসায়ীকে ঢাকা মহানগরে সিএনজি থ্রি হুইলার চলাচলের অনুমতি নিয়ে দেওয়ার কথা বলে এ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

ডবলমুরিং থানার ওসি সদীপ দাশ সমকালকে বলেন, 'সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে ৯১ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে। তিনি গ্রেপ্তার হলে তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চট্টগ্রামে আনা হবে। আর আমরাও তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাব।'

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, ১৩৮০ ডিটি রোডের ধনিয়ালাপাড়ার অবস্থিত গাড়ি, গাড়ির টায়ার ও যন্ত্রাংশ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স মেগা মোটর্স। মামলার আসামি মো. শহীদুল্লাহর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির মালিক জিয়া উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের সঙ্গে পরিচিত হন মো. সাহেদ। তিনি নিজেকে বড় ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বলে পরিচয় দেন। সেই সুবাধে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে উঠে। প্রতিষ্ঠানটির আমদানি করা মেগা ব্র্যান্ডের সিএনজি থ্রি হুইলার গাড়ি ঢাকায় চলাচলের জন্য রুট পারমিটসহ আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অনুমতি নিয়ে দেওয়ার কথা বলেন সাহেদ। তার ওপর আস্থা রেখে এসব কাজের জন্য সাহেদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেডের প্রিমিয়ার ব্যাংকের হিসাবে ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত ১৩ দফায় ৫৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা জমা দেন ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর। সাহেদ তার অফিসে এসে নিয়ে যান ৩২ লাখ টাকা। এভাবে ৯১ লাখ ২৫ হাজার টাকা নেওয়ার পর বিআরটিএ চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত ২০০টি থ্রি হুইলার ঢাকা মহানগরে চলাচলের একটি অনুমতিপত্রের কাগজ জাহাঙ্গীরকে দেন তিনি। সেটি নিয়ে তাদের সন্দেহ হওয়ায় বিআরটিএ'তে খোঁজ নিয়ে দেখেন অনুমতিপত্রটি ভুয়া। বিষয়টি সাহেদকে জানালে উল্টো জাহাঙ্গীরকে ভয়ভীতি দেখান। এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীর অসুস্থ হয়ে পড়েন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির দেখাশোনা করেন তার চাচাতো ভাই মো. সাইফুদ্দিন। 

মো. সাইফুদ্দিন সমকালকে বলেন, 'বিষয়টি মীমাংসার জন্য একাধিকবার আশ্বাস দেওয়ায় মামলা দায়ের করতে দেরি হয়েছে। এ ঘটনার পর আমার ভাই অসুস্থ হয়ে পড়ায় সাহেদের সঙ্গে আমি যোগাযোগ করতাম। এক পর্যায়ে তিনি আমার নম্বর ব্লক করে দেন।'