চাঁদপুরের কচুয়ায় শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলীকে মারধরের ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান শিশিরকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার কচুয়া থানায় হামলার শিকার প্রকৌশলী নূর আলম নিজে বাদি হয়ে এই মামলা করেন। 

এদিকে দ্রুত আসামিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে এবং বিচার না হলে সারাদেশের শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলীরা কর্মবিরতিতে যাবেন বলে জানিয়েছেন নূর আলম।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- কচুয়ার কোয়া গ্রামের হোসেন, রসুলপুর গ্রামের জহির হোসেনসহ অজ্ঞাত ১৫/২০ জন।

মামলার এজাহারে হামলার শিকার নূর আলম উল্লেখ করেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬ তলা ভিত বিশিষ্ট কচুয়া শহীদ স্মৃতি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ দরপত্রের মাধ্যমে পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অনন্ত ট্রেডার্স (জেবি)। এ কাজের তত্ত্বাবধান করে আসছেন ঠিকাদারের লোক আশরাফুল আলম। রোববার স্কুলটির দ্বিতীয় তলার ছাদ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি চলা অবস্থায় আমি তা পরিদর্শনের জন্য যাই। সেখানে যাওয়ার আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপায়ন দাস শুভ-এর অফিসে গিয়ে উন্নয়নমূলক কাজের বিষয়ে আলোচনা করি। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ স্কুল ভবনের কাজ পরিদর্শনে যাওয়া পর হঠাৎ দুপুর ১২টার দিকে প্রধান আসামি উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির ১৫-২০ জনের একটি দল নিয়ে সেখানে যান। এ সময় তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সামনেই কাজের আমাকে এবং তত্ত্বাবধানকারীকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ শুরু করেন। এক পর্যায়ে আমার নাক-মুখে এলোপাথাড়ি ঘুষি মারতে শুরু করেন। সেই সঙ্গে হত্যার উদ্দেশ্যে হুমকি-ধমকি প্রদান করেন। পরবর্তীতে তারা দড়ি নিয়ে আসেন আমাকে বেঁধে রাখার জন্য। এসময় সাইটের বাশ দিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আমার ডান পায়ের হাঁটুতে আঘাত করেন। পরে অন্যান্য আসামিরাও বাঁশের লাঠি দিয়ে আমাকে মারধর করেন। এ অবস্থায় কাজের তত্ত্বাবধানকারী এগিয়ে আসলে তাকেও হত্যার হুমকি দিয়ে মারধর করেন। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে নির্বাহী কর্মকর্তার সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে চলে আসি। আমি তাৎক্ষণিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে চাইলেও হামলাকারীদের মধ্যে দু’জন মোটরসাইকেল নিয়ে হাসপাতালের সামনে এসে আমাকে ধাওয়া করেন। এ অবস্থায় আমি প্রাণভয়ে সেখান থেকে এসে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেই।

হামলার শিকার নূর আলম বলেন, দ্রুত আমার ওপর হামলার যথাযথ ব্যবস্থা ও বিচার চাই। তা না হলে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের সারাদেশের প্রকৌশলীরা আন্দোলনে নামবেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের সংগঠন ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (আইডিইডি) সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দ্রুত এ ঘটনার বিচার না হলে সারাদেশের প্রকৌশলীরা কর্মবিরতিতে যাবেন।

কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ওয়ালিউল্লাহ বলেন, এ ঘটনায় ৩ জনের নাম উল্লেখ করে ২০/২৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।