ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই বৃদ্ধা রহিমা বেগমকে (৮৫)  খুন করেন গেলমান ভূইয়া। হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন গেলমান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রহিমা হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরির্দশক মো.কবির হোসেন।

শুক্রবার বিকালে ব্র্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদ হোসাইনের আমলি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গেলমান। এরপর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারগারে পাঠানো হয়।

গত ২৬ জুলাই উপজেলার সদর ইউনিয়নের দাঁতমন্ডল গ্রামের আক্তার ভূইয়ার বসতবাড়ি সংলগ্ন ডোবায় একটি লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোজাম্মেল হোসেন ও সরাইল সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনিছুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠান। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবলু ভূইয়া, আছির আলম, জানে আলম ও আছকিরকে থানায় আনা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে জরিফ হোসেন অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন সমকালকে বলেন, গেলমান ভূইয়া আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদে গেলমান জানান,‘একই গ্রামের সালাউদ্দিনের সঙ্গে তার চাচা ঘোড়া মাহবুব গংদের প্রায় ১৫ বছর ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আদালতে মামলা চলমান। ঘটনার দিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে রহিমাকে মাজারে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঘর থেকে বের করে আবুসাইদ কাদরীর বাংলো বাড়ির পাশে নিয়ে মাটিতে ফেলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে একই গ্রামের সন্তোষ দেবনাথের কাছ থেকে একটি ছোট নৌকায় করে লাশ সালাউদ্দিনের বাড়ির পাশে আক্তার মিয়ার ডোবায় ফেলে দেন। পরদিন সকালে ঘোড়া মাহবুব ও বাবলু প্রচার করতে থাকে সালাউদ্দিনের লোকজন রহিমাকে হত্যা করেছে। এর পর সালাউদ্দিনের পক্ষের লোকজনদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায় ঘোড়া মাহবুব ও বাবলুর লোকজন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সরাইল সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনিছুর রহমান বলেন, লাশ উদ্ধারের খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে নিহত রহিমার কয়েকজন নিকটাত্মীয়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। তাদের দেয়া তথ্য মতে হত্যার মূল আসামি গেলমানকে হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানার মুড়াকড়ি ইউনিয়ন থেকে আটক করি। আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন গেলমান।