- সারাদেশ
- বানভাসিদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিলেন ফরিদপুরের ডিসি
বানভাসিদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিলেন ফরিদপুরের ডিসি

বানভাসিদের মধ্যে খাবার বিতরণ করছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক
ফরিদপুরে বানভাসিদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিলেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকার।
ঈদের দিন শনিবার দুপুরে বেড়িবাঁধে আশ্রয় নেওয়া বানভাসি মানুষের মাঝে হাজির হন জেলা প্রশাসক। তাদের সঙ্গে ঈদের কুশল বিনিময় শেষে খাবারের প্যাকেট তুলে দেন তিনি।
দুপুর ২টার দিকে বন্যাকবলিত শহরতলীর সাদীপুর বেড়িবাঁধ, ময়নার মোড়, ভাজনডাঙ্গা, বিলগজারিয়া ও খুশির বাজার এলাকায় বানভাসি ৬ শতাধিক মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক। এসময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রেজা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘উই কেয়ার’ ও ‘তরুছায়া ফাউন্ডেশন’ এর নেতৃবৃন্দ খাবার বিতরণ কর্মসূচিতে সহযোগিতা করেন।
বেড়িবাঁধে খাবার বিতরণকালে অতুল সরকার বলেন, বানভাসি মানুষের পাশে সব সময় রয়েছে জেলা প্রশাসন। তাদের রান্না করার কোনো ব্যবস্থা নেই, তাই ঈদের দিন তাদের জন্য একটু ভালো খাবারের ব্যবস্থা করলাম। তাদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ একটু ভাগাভাগি করে নিলাম।
তিনি বলেন, বানভাসিদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া রান্না করা খাবারও বিতরণ করা হচ্ছে। একটি মানুষও না খেয়ে থাকবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রেজা, ‘উই কেয়ার’ এর সমন্বয়কারী সঞ্জয় দাস, ‘তরুছায়া ফাউন্ডেশন’ এর সভাপতি খালিদ মাসুদ সজিব ও ‘আমরা সুহৃদ’ এর আহ্বায়ক রেজাউল করিমসহ কর্মকর্তারা।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রেজা বলেন, ঈদের খুশি ভাগাভাগি করে নিতে বানভাসি মানুষের মধ্যে রান্না করা খাবার নিয়ে ঈদের দিন হাজির হয়েছি। প্রত্যেকের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সবসময় তাদের পাশে আছি।
জানা যায়, জেলার সাত উপজেলায় এখন পর্যন্ত ৫৫০টি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। পানিবন্দি হয়ে রয়েছে দুই লক্ষাধিক মানুষ। বন্যায় এ পর্যন্ত ৮ হাজার ১৬৭ হেক্টর ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে গেছে ৪০ মিটার। রাস্তা ভেঙে গেছে ১ হাজার ৪শ’ মিটার। ৩২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ হাজার ৫শ’ ৬৮ জন মানুষ ও ১ হাজার ৩শ’ ৪৪টি গবাদিপশু আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া বেড়িবাঁধে ২ হাজার ২৫০ জন মানুষ ও ৪শ’ গবাদি পশু আশ্রয় নিয়েছে। গঠন করা হয়েছে ২৫টি মেডিকেল টিম।
বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন। শুধু ত্রাণ বিতরণ নয়, বানভাসি মানুষকে দেওয়া হচ্ছে শুকনো খাদ্যসামগ্রী, পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট। বিভিন্ন বাঁধ ও আশ্রয়কেন্দ্রে আগতদের মধ্যে রান্না করা খিচুড়ি বিতরণ করা হচ্ছে নিয়মিত। শিশুদের জন্য আলাদাভাবে নিয়মিত পুষ্টিকর শিশু খাদ্য বিতরণ করা হচ্ছে।
গত বুধবার ঈদ-উল-আজহার আগেই ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এদিকে, শনিবার সকালে ফরিদপুর সদর উপজেলার পদ্মা নদীর পাড় ধলার মোড় ও আশপাশের এলাকার বন্যার্তদের মধ্যে ঈদ উপহার হিসেবে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে সেনাবাহিনী।
সেনা প্রধানের পক্ষ থেকে বন্যাদুর্গত ৫শতাধিক মানুষের মধ্যে ঈদ উপহার হিসেবে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়। ক্যাপ্টেন সাকিফ মুবাশ্বিরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি টিম এই ঈদ উপহার বিতরণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে।
মন্তব্য করুন