গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি এবং পানি কমতে শুরু করলেও তিস্তায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা। 

টানা ভাঙনে জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর, পুটিমারী, কাপাসিয়া ইউনিয়নের ভাটি কাপাসিয়া বাদামের চর, পোড়ার চর, কালাইসোতার চর, কেরানির চর, ফাকরের চর, লালচামার, হরিপুর ইউনিয়নের মাদারিপাড়া, চর মাদারিপাড়া, কানিচরিতা বাড়ি গ্রামের হাজার একর জমি ও বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন কবলিত পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

পানি কমতে শুরু করায় নদীতে তীব্র স্রোত দেখা দিয়েছে। স্রোতের কারণে তিস্তার বালু চরের সবুজের সমারোহ ও বসতবাড়ি বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে। 

ভাঙনের মুখে পড়েছে কয়েক হাজার একর আবাদি জমি ও বসতবাড়ি। উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর,  শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার নদীর বিভিন্ন চরে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। 

কাপাসিয়া ইউনিয়নের লালচামার গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন,  তিস্তার ভাঙনে চরাঞ্চলবাসী দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ সময় তীব্র আকারে নদী ভাঙার কথা নয়। অথচ দীর্ঘদিন থেকে দফায় দফায় নদী ভাঙন চলছে। যার কারণে কাপাসিয়া ইউনিয়নের প্রায় হাজারেরও বেশি একর জমি ও বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, চরের মানুষ সবজির আবাদ করে সংসার চালায়। কিন্তু নদী ভাঙন এবং বন্যার কারণে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। 

হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাফিউল ইসলাম জিমি জানান, পলি জমে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে, সে কারণে সামান্য পানিবৃদ্ধি পেলে নিচু এলাকা প্লাবিত হয় এবং সারা বছর নদী ভাঙন অব্যাহত থাকে। নদী ভাঙন ঠেকাতে হলে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। 

উপজেলা নিবার্হী অফিসার কাজী লুতফুল হাসান জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মোতাবেক উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পানি কমতে শুরু করেছে,  তবে বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। 

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী পরিচালক মোখলেছুর রহমান জানান, নদী ভাঙন রোধ একটি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা। তবে নদী শাসন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, বাঁধ সংস্কার ও সংরক্ষণের ব্যাপারে সরকারের একটি প্রকল্প ইতিমধ্যে একনেকে পাস হয়েছে।