নওগাঁয় বন্যায় প্রায় ৭৬ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত

নওগাঁয় বন্যায় ৭ উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের ১৮ হাজার ৯৬৮ পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৭৬ হাজার মানুষ। ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে কেউ পুকুরের মাছ, মাঠের ফসল ও ঘরবাড়ি হারিয়ে হয়েছেন নিঃস্ব। জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. কামরুল আহসান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত ১৫ জুলাই প্রথম নওগাঁর মান্দায় আত্রাই নদীর বাঁধ ভেঙে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এছাড়া পরপর তিনদিনে মান্দা, আত্রাই ও রাণীনগর উপজেলায় অন্তত ৭টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে যায়। এতে আত্রাই উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন, মান্দার ৪টি ইউনিয়ন এবং রানীনগর, নওগাঁ সদর, পোরশা, সাপাহার ও মাহদেবপুর উপজেলায় ১টি করে ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। পানি বন্দি হয়ে পড়ে লক্ষাধিক মানুষ।

জেলা ত্রাণ পুর্নবাসন কর্মকর্তা কামরুল আহসান বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় সরকারের পক্ষ থেকে খাদ্য ও নগদ অর্থ সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে। এসবের মধ্যে জেলার আত্রাই উপজেলায় ১৪ হাজার পরিবারের ক্ষতিগ্রস্ত ৫৬ হাজার মানুষের মধ্যে ৬৫ মেট্রিকটন চাল, ১ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ নগদ টাকা, শুকনা খাবার ৪শ’ প্যাকেট, শিশুখাদ্য ক্রয় বাবাদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ ২ লাখ ১০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। মান্দা উপজেলায় ৪ হাজার ৪৫০ পরিবারের ক্ষতিগ্রস্ত ১৭ হাজার ৮০০ মানুষের মধ্যে ৫০ মেট্রিক টন চাল, ৯৫ হাজার নগদ টাকা, শুকনা খাবার ৩শ’ প্যাকেট, শিশুখাদ্য ক্রয় বাবদ ৯০ হাজার টাকা ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। রানীনগরের ৩০০ পরিবারের ক্ষতিগ্রস্ত ১ হাজার ২০০ পরিবারের মধ্যে ১০ মেট্রিক টন চাল, ১৫ হাজার নগদ টাকা, শিশুখাদ্য ৫০ প্যাকেট, শিশুখাদ্য ক্রয় বাবদ ৩০ হাজার টাকা ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ ১ লাখ ৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। নওগাঁ সদর উপজেলায় ৫০ পরিবারের ক্ষতিগ্রস্ত ২০০ মানুষের মধ্যে ১০ মেট্রিকটন চাল, ১৫ হাজার নগদ টাকা, শুকনা খাবার ৫০ প্যাকেট, শিশুখাদ্য ক্রয় বাবদ ৩০ হাজার টাকা, পোরশা উপজেলায় ১৯ পরিবারের ক্ষতিগ্রস্ত ৭০ জন মানুষের মধ্যে শুকনা খাবার ৭৫ প্যাকেট, শিশুখাদ্য ক্রয় বাবদ ৩০ হাজার টাকা ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ ৭০ হাজার টাকা, সাপাহার উপজেলায় ২০ পরিবারের ক্ষতিগ্রস্ত ৮০ জন মানুষের মধ্যে শুকনা খাবার ৭৫ প্যাকেট, শিশুখাদ্য ক্রয় বাবদ ৩০ হাজার টাকা ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ ৭০ হাজার টাকা এবং মহাদেবপুর উপজেলায় ১২৯ পরিবারের ৫১৬ জন মানুষের মধ্যে শুকনা খাবার ৫০ প্যাকেট, শিশুখাদ্য ক্রয় বাবদ ৪০ হাজার টাকা ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ ৭০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে জেলায় বন্যার্তদের সহযোগিতায় এখনও ২১৫ মেট্রিক টন জিআর কর্মসূচীর চাল, নগদ ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা এবং ১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার মজুদ রয়েছে।