- সারাদেশ
- চোখ ভিজে যায় সবার
চোখ ভিজে যায় সবার

মৃত ভাতিজিকে বুকে নিয়ে রাস্তায় শুয়ে চাচার বিলাপ -ছবি: সংগৃহীত
মৃত ভাতিজিকে বুকে নিয়ে রাস্তায় শুয়ে বিলাপ করছেন চাচা। এই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ছবিটি যারা দেখেছেন, সবার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে; চোখ ভিজে গেছে।
মঙ্গলবার সকালে ময়মনসিংহের ফুলপুরে মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়লে শিশুটিসহ মারা যান আটজন। তারা সবাই পরস্পর আত্মীয়। শেরপুর জেলার নকলায় এক আত্মীয়ের জানাজায় অংশ নিতে যাচ্ছিলেন তারা। পথে ফুলপুরের বাঁশাটি এলাকায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে নিজেরাই জানাজার যাত্রী হলেন।
নিহতরা হলেন- ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বাকশীবাড়ি বিরুনিয়া গ্রামের শাহজাহানের মা মিলুয়ারা বেগম (৫৫), তার স্ত্রী বেগম (৩০), মেয়ে বুলবুলি আক্তার (৭), গফরগাঁও উপজেলার বাতুরী মশাখালী এলাকার শামসুল হক (৬৫), একই উপজেলার শেখবাজার এলাকার রতনের স্ত্রী রিপা খাতুন (৩০), রতনের মা রেজিয়া খাতুন (৫৩), মশাখালী এলাকার হাফিজ উদ্দিনের স্ত্রী পারুল আক্তার (৫০) ও তারাকান্দা উপজেলার দাদরা গ্রামের মৃত শহর আলীর ছেলে নবী হোসেন (৩০)। তারা পরস্পর আত্মীয় বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বাকশীবাড়ি বিরুনিয়া গ্রামের চান মহনের ছেলে শাহজাহান-শারফুলের খালাতো ভাই শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বারমারি এলাকার হাশেম সোমবার রাতে মারা যান। এ খবরে তার জানাজায় অংশ নিতে আত্মীয়স্বজন মিলে মঙ্গলবার সকালে একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করেন। সকাল পৌনে ৮টায় ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার ছনধনা ইউনয়িনের বাঁশাটি গ্রামে পৌঁছলে একটি ট্রাককে সাইড দিতে গিয়ে মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পুকুরে পড়ে যায়। খবর পেয়ে ফুলপুর উপজেলার ফায়ার সার্ভিস স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় উদ্ধার তৎপরতা চালায়। পুকুরে পড়ে থাকা দুমড়েমুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাসটি থেকে একে একে ১৪ জনকে ওপরে তুলে আনলেও আটজনকে মৃত পাওয়া যায়। বাকি ছয়জন বেঁচে যান।
তারা হলেন- চান মহনের ছেলে শাহজাহান, শারফুল, মিলনের ছেলে মিজান, লাহাবৈ রাজৈ গ্রামের আবুল কালামের ছেলে রাজু, গফরগাঁওয়ের মশাখালী গ্রামের ওসমানের ছেলে হাবীব ও শেখবাজার গ্রামের এলাহী বপের ছেলে রতন। মিজান ও রতনকে ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা সুস্থ আছেন। তবে দুর্ঘটনার পর মাইক্রোবাসের চালক নজরুল ইসলাম পালিয়ে যান।
ফুলপুর থানার ওসি ইমারত হোসেন গাজী জানান, আত্মীয়ের জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য সকালে ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে একটি মাইক্রোবাসে ১৪ জন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনায় একই পরিবারের শিশুসহ তিনজন ও অপর এক পরিবারের দু'জন মারা যান। আহতদের উদ্বৃতি দিয়ে তিনি জানান, চালক ঘুমঘুম চোখে গাড়িটি চালানোর কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।
মন্তব্য করুন