খুলনার কয়রা উপজেলায় কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী বাঁধের ভেঙে যাওয়া দুটি স্থানে অস্থায়ীভাবে মেরামত কাজ শেষ হয়েছে। প্রায় তিন মাস পর নদের পানি প্রবেশ বন্ধ হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে ওই এলাকার জলবন্দি ২০০ পরিবারে। তবে কাশিরহাটখোলা বাঁধ মেরামত না হওয়ায় এখন পর্যন্ত উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের ১২টি গ্রামে জোয়ার-ভাটা অব্যাহত রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বালুর বস্তা ও মাটি দিয়ে উপজেলার ২ নম্বর কয়রা ও দশহালিয়া এলাকার ভেঙে যাওয়া বাঁধ অস্থায়ীভাবে মেরামত কাজ শনিবার শেষ হয়। গত ২০ মে আম্পানের তাণ্ডবে বাঁধ দুটি ভেঙে যাওয়ার পর ২ নম্বর কয়রার বাঁধটি গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করেন। তবে ২০ আগস্ট জোয়ারের চাপে ফের ওই বাঁধ ভেঙে কয়রা উপজেলা পরিষদসহ আশপাশের আটটি গ্রাম ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। অন্যদিকে আম্পানের পর থেকেই দশহালিয়া এলাকার ভাঙা বাঁধ দিয়ে নদীর পানি ওঠানামা চলছিল। অবশেষে প্রায় চার হাজার মানুষের টানা কয়েক দিনের পরিশ্রমে বাঁধ দুটিতে মেরামত শেষ হয়েছে।

এদিকে ২ নম্বর কয়রা বাঁধ ফের ভেঙে যাওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও তাদের নিয়োজিত ঠিকাদারের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন স্থানীয়রা। ২ নম্বর কয়রা গ্রামের খোকন শেখ, রবিউল ইসলাম, সবেদ আলীসহ বেশ কয়েকজন জানান, আম্পানে ভেঙে যাওয়া বাঁধটি মেরামতের পর তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পাউবো থেকে স্থানীয় এক ঠিকাদারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি নগদ বরাদ্দ না পাওয়ার অজুহাতে সেখানে কাজ করেননি। ফলে জোয়ারের চাপে বাঁধটি ফের ভেঙে যায়।

কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম শফিকুল ইসলাম বলেন, পাউবো নিয়োজিত ঠিকাদার নগদ টাকা পাওয়ার পর সেখানে শ্রমিক দিয়ে কাজ করিয়ে বাঁধটি অস্থায়ীভাবে মেরামত করেছেন। তবে কাজটি আগেই না করায় মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী সেলিম মিয়া বলেন, দশহালিয়া এলাকার ৪৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের বাঁধটি মেরামতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। আম্পানের পর থেকে ওই বাঁধটি মেরামতের জন্য চেষ্টা অব্যাহত থাকে। কিন্তু জোয়ার-ভাটার চাপে ভাঙনের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় সম্ভব হয়নি। কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, কাশিরহাটখোলার ভাঙা বাঁধটি মেরামত করা হলে শতভাগ লোনাপানি মুক্ত হবে উপজেলা।