- সারাদেশ
- ঝালকাঠিতে বিদ্যালয় মাঠ দখল করে স্টল আ'লীগ নেত্রীর, গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন
ঝালকাঠিতে বিদ্যালয় মাঠ দখল করে স্টল আ'লীগ নেত্রীর, গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন

ঝালকাঠি শহরে একটি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ভেঙে খেলার মাঠে অবৈধভাবে নির্মিত বাণিজ্যিক স্টল ভেঙে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্কুল পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি শারমিন মৌসুমী কেকা বিদ্যালয়ের মাঠে ১০টি স্টল নির্মাণ করছিলেন।
সুগন্ধা পৌর আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিতা মণ্ডল অভিযোগ করেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি থাকাকালে কেকা খেলার মাঠে স্টল নির্মাণের জন্য জোরপূর্বক প্রস্তাব তৈরি করে পাস করিয়ে নেন। পরে ভুল বুঝিয়ে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে পৌরসভা থেকে তাৎক্ষণিক প্ল্যানও অনুমোদন করিয়ে নেন। তিনি গত ১৪ আগস্ট স্টল নির্মাণের কাজ শুরু করেন।
রিতা মণ্ডল বলেন, স্টল নির্মাণের জন্য শহীদ মিনার ভেঙে ফেলায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিদ্যালয়ের নতুন অ্যাডহক কমিটি জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পৌরসভার কাছে লিখিতভাবে স্টল ভেঙে ফেলার দাবি জানায়। পরে পৌর কর্তৃপক্ষ স্টল ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়।
বিদ্যালয়-সংশ্লিষ্টরা জানান, ঝালকাঠি শহরের সার্কিট হাউস সংলজ্ঞ প্রধান সড়কের পাশে গুরুধাম এলাকায় ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিতে ৪৭৫ ছাত্রী পড়ালেখা করে। পাশে মিলন মন্দির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ৩৪০ জন। দুটি বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সমাবেশ (অ্যাসেমব্লি), বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন দিবসের অনুষ্ঠানে এই মাঠ ব্যবহূত হয়। মাঠের পশ্চিম পাশে ছিল শহীদ মিনার। গত ১৪ আগস্ট বিদ্যালয়ের বিদায়ী সভাপতি কেকা খেলার মাঠের প্রায় দুই হাজার বর্গফুট জায়গায় স্টল নির্মাণ শুরু করেন। কয়েক শিক্ষক জানান, স্টলগুলো কমিটির সভাপতি, প্রধান শিক্ষক, সরকারদলীয় কয়েক নেতা ও দু'জন কাউন্সিলরের মধ্যে ভাগাভাগির চুক্তি হয়। এর মধ্যে ঝালকাঠি পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান তাপুর নামেও একটি স্টল বরাদ্দ করা হয়। স্টল নির্মাণের তদারকির দায়িত্ব দেওয়া তাপুকে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে কেকা বলেন, বিদ্যালয়ের আয় বৃদ্ধি ও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ব্যয় কমাতে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্টল নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। এখন অ্যাডহক কমিটি স্টল ভেঙে ফেলতে পারে না। অ্যাডহক কমিটির এটা কাজ না। পৌরসভা আমাদের প্ল্যান অনুমোদন দিয়ে আবার বাতিল করেছে। মেয়র তাহলে প্ল্যানে সই দিলেন কেন?
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং (অ্যাডহক) কমিটির সভাপতি গাজী সানাউল হক বলেন, নিয়মবহির্ভূতভাবে জোরপূর্বক স্টল নির্মাণের প্রস্তাব পাস করেন সাবেক সভাপতি। এটা অনৈতিক কাজ। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি মাঠ নষ্ট করে কোনো স্থাপনা করতে দেওয়া হবে না।
ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার বলেন, পৌরসভায় যে কাগজপত্র দিয়ে প্ল্যান নেওয়া হয়েছিল, তা সঠিক ছিল না। তাই প্ল্যান বাতিল করা হয়েছে। তার নির্দেশে বৃহস্পতিবার উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হয়।
মন্তব্য করুন