জীবিত আসামিকে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত দেখিয়ে অব্যাহতি সুপারিশ করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। তদন্তে গাফেলতির প্রমাণ পাওয়ায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) গঠিত কমিটি এ সুপারিশ করে সম্প্রতি সিএমপি কমিশনার কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। 

এর আগে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দিপঙ্কর চন্দ্র রায়কে বরখাস্ত করা হয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে সিএমপির তদন্ত কমিটির প্রধান নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিবি-উত্তর) আলী হোসেন বলেন, 'তদন্ত কর্মকর্তার গাফেলতিতে এ ভুল হয়েছে। বন্দুকযুদ্ধের ঘটনার মামলা ও এই মামলা আলাদা। দুই আসামির নামে মিল থাকলেও বাবার নাম ও ঠিকানা ভিন্ন। তদন্ত কর্মকর্তা মামলা শেষ করার আগে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সাক্ষ্য স্মারক (এমই) দেননি। ওটা দিলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানতে পারতেন মামলার কী অবস্থা। কিন্তু তিনি তা না দিয়ে নিজে নিজে মামলা শেষ করে দিয়েছেন।'

২০১৮ সালের নভেম্বরে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানায় ষাটোর্ধ্ব শাহ আলম নামের এক ব্যক্তি তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধরের অভিযোগে নাতনী জামাইসহ সাত জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। প্রায় এক বছর তদন্ত করে গত বছরের নভেম্বরে মামলার ছয় আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা বায়েজিদ বোস্তামী থানার এসআই দিপঙ্কর রায়। তবে মো. জয়নাল নামের এক আসামিকে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত উল্লেখ করে অব্যাহতির সুপারিশ করেন তিনি। কিন্তু আসামি জয়নাল তার মামলায় প্রতিনিয়ত হাজিরা দিয়ে আসছেন। 

দীর্ঘদিন বিষয়টি অগোচরে থাকলেও করোনাভাইরাসজনিত কারণে বিরতির পর সম্প্রতি আদালতের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হলে আসামি জয়নালের হাজিরা দিতে আসাটা অনেকের নজরে আসে। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দীপঙ্করকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর নগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উত্তর জোনের উপ-কমিশনারকে প্রধান করে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। কমিটি গত সোমবার প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে।