পিরোজপুরের নাজিরপুরে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী ও দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে দিনভর আটকে রেখে মারধর ও চাঁদা দাবি করা হয়েছে। কলেজছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি উভয়কে বিবস্ত্র করে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেছে স্থানীয় কতিপয় বখাটে।

গত বুধবার এ ঘটনা ঘটেছে। সন্ধ্যায় চিৎকার শুনতে পেয়ে স্থানীয়রা এসে আহত ছাত্রছাত্রীকে উদ্ধার করে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক তাদের ভর্তির উদ্যোগ নেন। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীরা আহতদের হাসপাতাল থেকে নিয়ে বিষয়টি মীমাংসার নামে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।

খবর পেয়ে নাজিরপুর থানা পুলিশ ওই রাতেই আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেপে ভর্তি করে। কলেজ ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে বুধবার রাতে নাজিরপুর থানায় এ নিয়ে একটি মামলা করেছেন। পুলিশ রাতেই মামলার মূল আসামি মনির শেখকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে।

এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় যুবসমাজ। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা সদরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন কনসার্ট ইম্পেরিয়াল ক্লাবের সভাপতি মো. হৃদয় খান, কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফারহানা ঐশী, সহপাঠী সুবির বিশ্বাস প্রমুখ।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কলেজছাত্রী জানান, বুধবার সকালে তিনি উপজেলা সদরে প্রাইভেট পড়া শেষে তার প্রতিবেশী ছোটভাই দশম শ্রেণির ছাত্র সজীবকে সঙ্গে নিয়ে শাখারীকাঠি ইউনিয়নের হোগলাবুনিয়া গ্রামে দাদার বাড়িতে যাচ্ছিলেন। সকাল ৯টার দিকে ওই ইউনিয়নের গোপেরখাল এলাকায় পৌঁছলে স্থানীয় মনির, অভিজিৎ, শফিক মল্লিক ও শুভ তাদের জোর করে পাশের একটি কলাবাগানে নিয়ে যায়। তারা তাদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক আছে, এমন অভিযোগ তুলে মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে তাদের বিবস্ত্র করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। রাজি না হওয়ায় তাদের পুনরায় মারধর করতে থাকে। সন্ধ্যার দিকে স্থানীয়রা তাদের চিৎকার শুনে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

নাজিরপুর থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম মুনির জানান, এ ঘটনায় কলেজছাত্রীর বাবার অভিযোগের ভিক্তিতে থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার মূল আসামি মনিরকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।