ঢাকার আশুলিয়ায় বেড়াতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন দুই বান্ধবী। স্থানীয় একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে তাদের ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ওই কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হলে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করে একটি পক্ষ। ঘটনার প্রায় ৩৬ দিন পর বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের। এরপর পুলিশ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিশোর গ্যাংয়ের তিন সদস্যকে আটক করেছে।
গত ৩০ আগস্ট একই বাসার ভাড়াটিয়া দুই তরুণের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন ওই দুই বান্ধবী। এ সময় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ওই দুই তরুণকে একটি ঘরে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করে। আটক কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা হলো- দলনেতা সারুফ, ডায়মন্ড আলামিন ও জাকির। গতকাল বুধবার খুলনা থেকে সারুফকে এবং আশুলিয়ার ভাদাইল ও নয়ারহাট থেকে বাকিদের আটক করে পুলিশ। তারা সবাই প্রিন্স কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। গ্যাংয়ের অন্য সদস্যরা হলো- জিদান, রেদওয়ান ও আল আমিন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থেকে একটি কারখানায় কাজ করতেন ভুক্তভোগী দুই বান্ধবী। কারখানা ছুটি থাকায় ঘটনার দিন তারা ভাদাইলের গুলিয়ারটেক এলাকায় বেড়াতে বের হয়েছিলেন। এ সময় প্রিন্স কিশোর গ্যাংয়ের ১২-১৪ সদস্য তাদের ঘিরে ফেলে। এরপর দুই তরুণকে মারধর করে আলাদা একটি ঘরে বসিয়ে রাখে। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা দুই বান্ধবীকে ধর্ষণ করে এর ভিডিও ধারণ করে বখাটেরা।
ধর্ষণের শিকার কিশোরীদের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া ইসরাফিল নামে এক তরুণ জানান, বখাটেরা তাদের ঘিরে ফেলে মেয়েদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কী তা জানতে চায়। এ সময় তারা আত্মীয় পরিচয় দিলেও বখাটেরা কোনো কিছু না শুনে তাদের ওপর চড়াও হয় এবং মারধর করতে থাকে। পরে ধর্ষণ করে।
এরপর তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয় এবং কাউকে এ ঘটনা জানালে সবাইকে মেরে ফেলা হবে বলে শাসিয়ে দেয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার প্রায় এক মাস পর কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর জের ধরেই ধর্ষণের ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়।
ধর্ষণের ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান সারুফের বাবা আকরাম আলী কিশোর গ্যাংয়ের অন্য সদস্যসহ অভিযুক্তদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে স্থানীয় মাতবরদের মাধ্যমে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ দেখে ধর্ষকদের গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করে।
আশুলিয়া থানার এসআই আসওয়াদুর রহমান জানান, ভিডিও ফাঁস হওয়ার পরপরই কোনো অভিযোগ না পেলেও তদন্তে নামে থানা পুলিশ। অভিযানে ওই গ্যাংয়ের দলনেতাসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

বিষয় : কিশোর গ্যাংয়ের তিন সদস্য গ্রেপ্তার

মন্তব্য করুন