
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের চারজনকে গলা কেটে হত্যার রহস্য এখনও উদ্ঘাটন করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মামলার সংশ্নিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, একাধিক ক্লু নিয়ে এগোচ্ছেন তারা। নিহত শাহিনুর রহমানের ছোট ভাই রায়হানুল ইসলামকে শুক্রবার এই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আজ রোববার রিমান্ড শুনানি হবে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে কলারোয়া থানায় মামলা হওয়ার পর থেকে মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি)। মামলার এজাহারে কোনো আসামির নাম না থাকলেও শুক্রবার নিহত শাহিনুরের ভাই রায়হানুল ইসলামকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। তদন্তসংশ্নিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রায়হানুলের হাতে ধারালো অস্ত্রের কাটা চিহ্ন পাওয়া গেছে। মনে হচ্ছে, ওই রাতেই এটি ঘটেছে। ওইদিন কীভাবে তার হাত কেটেছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রায়হানুলের ওপর সন্দেহের এটি অন্যতম কারণ। প্রতিবেশী আকবরের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের পেছনে আরও কোনো যোগসূত্র রয়েছে কিনা তা দেখা হচ্ছে। আমরা অনেকগুলো ক্লু নিয়ে এগোচ্ছি।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মামলা সিআইডি তদন্ত করছে। কয়েকটি বিষয় সামনে রেখে এ মামলার আসল রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি শিগগিরই নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য জানা সম্ভব হবে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।
স্বজন ও এলাকাবাসীর মানববন্ধন: হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে গতকাল মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী ও নিহতদের স্বজনরা। নিহত শাহিনুরের বাড়ির সামনে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে নিহত শাহিনুরের মা শাহিদা খাতুন, বোন আছিয়া খাতুন, ইউপি সদস্য আব্দুস সাত্তার, শোহারাব, মমতাজ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলামসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনে নিহত শাহিনুরের বোন আছিয়া খাতুন বলেন, আমার ছোট ভাই রায়হানুল ইসলামকে এই হত্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। এ ঘটনায় সে জড়িত থাকতে পারে না। কারা আমার বড় ভাই, তার স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা করেছে তা পুলিশকেই খুঁজে বের করতে হবে।
নিহত শাহিনুরের মা শাহিদা খাতুন বলেন, আমি আমার সন্তান, বৌমা, আদরের দুই নাতিকে হারিয়েছি। আমি হত্যাকারীদের বিচার চাই। এ ঘটনার সঙ্গে আমার ছোট ছেলে রায়হানুল জড়িত থাকতে পারে না। দুই ভাইয়ের মধ্যে কোনো গোলযোগ ছিল না। তাদের মধ্যে মধুর সম্পর্ক ছিল। কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের খুঁজে বের করতে হবে।
মন্তব্য করুন