- সারাদেশ
- এএসআইয়ের নেতৃত্বে কিশোরীকে ধর্ষণ, বলছেন গ্রেপ্তার দুইজন
এএসআইয়ের নেতৃত্বে কিশোরীকে ধর্ষণ, বলছেন গ্রেপ্তার দুইজন

গ্রেপ্তার বাবুল হোসেন ও আবুল কালাম আজাদ- সমকাল
রংপুরে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রায়হানুল ইসলাম ওরফে রাজুর নেতৃত্বে এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার দুইজন ধর্ষণে ওই এএসআইয়ের সম্পৃক্ততার কথা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার ভোরে গ্রেপ্তারের পর বুধবার দুপুরে রংপুর অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তারা। নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরীকেও আদালতে হাজির করা হয় এদিন। সেখানে বিচারক কিশোরীরও জবানবন্দি নেন।
ধর্ষণের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেওয়া দুই আসামি হলেন- লালমনিরহাট সদর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন (৪০) ও আবুল কালাম আজাদ (৪২)।
পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনর (পিবিআই) পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন বলেন, বুধবার ওই কিশোরীকে আদালতে নিয়ে আসা হয়েছিল। সে বিচারকের সামনে জবানবন্দি দিয়েছে। আরও দুইজন আসামিও আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। তারা সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তারা বলেছে-এএসআইয়ের নেতৃত্বে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ওই কিশোরীও বাবুল ও আজাদের সংশ্লিষ্ট থাকার কথা জানিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ধাপে ধাপে তদন্ত করে এ মামলায় অগ্রসর হচ্ছি। আদালতে নেয়ার আগে আমরা ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সে জানিয়েছে- এএসআই রায়হানুল ইসলাম ওরফে রাজুর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে ওই পুলিশ সদস্যের নাম রায়হানুল না বলে সে রাজু বলেছে।
পুলিশ সুপার জানান, গত ২৫ অক্টোবর মহানগরীর হারাগাছ থানার ক্যাদারের পুল এলাকায় একটি বাড়িতে নবম শ্রেণির ছাত্রী ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে রায়হানুল। এরপর সেদিন সন্ধ্যায় রায়হানুল মোটরসাইকেলে করে ওই কিশোরীকে তার বাসায় পৌঁছে দেয়। ওই কিশোরীর মা মেয়ের সঙ্গে রাগারাগি করলে ওইদিন রাতে কিশোরী ওই বাড়িতে আবার এসে রাত যাপন করে।
তিনি বলেন, পরদিন সকালে ওই বাড়ির মালিক মেঘলা ও তার সহযোগী সুরভি আক্তার সমাপ্তি বাবুল ও আজাদকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে এবং তারা জোর করে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করায়। এটি আমরা জবানবন্দিতে পেয়েছি। একই কথা বাবুল ও আজাদ আদালতে বলেছে বলে জানতে পেরেছি।
অভিযুক্ত এএসআই রায়হানুল ইসলাম ওরফে রাজুকে এক নম্বর আসামি না করে মেঘলাকে এক নম্বর আসামি করার বিষয়ে তিনি বলেন, এজাহারে দুই নম্বর আসামি হলেই যে সে পার পেয়ে যাবে এমন সুযোগ নেই। অপরাধী হলে এক নম্বর হোক কিংবা পাঁচ নম্বর হোক যথাযোগ্য শাস্তি পাবেই। যেহেতু ওই এএসআই পুলিশের সদস্য ও ইউনিফর্ম সার্ভিসে আছে। তাই আমরা বিষয়টি নিখুঁতভাবে তদন্তসহ কোনভাবে সে যেন ফাঁক ফোকর দিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে সেদিকে আমরা অগ্রসর হচ্ছি।
এদিকে বুধবার দুপুরে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন, মহিলা পরিষদ, পেশাজীবি ফোরামসহ কয়েকটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা পুলিশ কমিশনার বরাবরে স্মারকলিপি দিয়ে মামলার অন্যতম আসামি রায়হানুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
ওই ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন মহানগর ডিবি পুলিশের এএসআই রায়হানুল ইসলাম। পরিচয়ের সময় রায়হান তার ডাক নাম রাজু বলে জানান। সম্পর্কের সূত্র ধরে ২৫ অক্টোবর ওই কিশোরীকে এক বাড়িতে ডেকে নেন রায়হান। সেখানে আসার পর রায়হান ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এরপর রায়হানের আরও কয়েকজন পরিচিত যুবক ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। সন্ধ্যায় সেখান থেকে বের হয়ে ওই ছাত্রী টহল পুলিশকে বিষয়টি জানান।
মন্তব্য করুন