- সারাদেশ
- মণ্ডপের চাল এক ডিওতে তুলে নেওয়ার অভিযোগ
মণ্ডপের চাল এক ডিওতে তুলে নেওয়ার অভিযোগ
তদন্তে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন

সদ্য সমাপ্ত দুর্গাপূজা উপলক্ষে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় ৮২ মণ্ডপের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ দেওয়া ৪১ টন চাল পৃথক ডিওতে না দিয়ে নিয়ম ভঙ্গ করে একটি ডিওতে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অনুদানের ওই চাল সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি পূজামণ্ডপে ৫০০ কেজি করে বিতরণ না করে কালোবাজারে বিক্রির পর নামমাত্র টাকা বিতরণ করা হয়।
এ ঘটনায় কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগ পেয়ে এ বিষয়ে তদন্তে নেমেছে জেলা প্রশাসন।
অভিযোগে জানা গেছে, এ বছর দুর্গাপূজায় সরকারিভাবে জেলার ৭৩৯টি মণ্ডপে ৩৬৯ দশমিক ৫ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে বরুড়া উপজেলার ৮২টি পূজামণ্ডপের জন্য ৪১ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিটি পূজামণ্ডপে ভক্তদের আহারের জন্য ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বরুড়ার ইউএনও কার্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা থেকে পূজামণ্ডপগুলোর জন্য দেওয়া ৪১ টন চাল সরকারি গুদাম থেকে তুলে কালোবাজারে বিক্রি করে দেওয়া হয়। পরে পুরো টাকা না দিয়ে ১৪ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গত ২৫ অক্টোবর ভুক্তভোগী বরুড়ার হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষে পঙ্কজ গোস্বামী, অসীম কুমার দে, প্রলয় চন্দ্র দে ও উত্তম কুমার বিশ্বাস কুমিল্লা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগকারীরা জানান, ৮২টি মণ্ডপের জন্য পৃথক ডিও না দিয়ে একটি ডিওতে সরকারি চাল উত্তোলনপূর্বক কালোবাজারে বিক্রি করে টাকার একাংশ আত্মসাৎ করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের সংশ্নিষ্টদের কোনো তদারকি না থাকায় এমনটি হয়েছে, যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।
অভিযোগের বিষয়ে বরুড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহীন হোসেন জানান, পূজা উদযাপন কমিটির নেতা ডা. তপন ভৌমিক ও তপন কৃষ্ণ বণিক ৪১ টন চালের একটি ডিও দেওয়ার পর তারা সব চাল উত্তোলন করেছেন। তারা পূজামণ্ডপগুলোতে চাল নাকি টাকা দিয়েছেন তা জানা নেই।
তবে পূজা উদযাপন কমিটির নেতা তপন ভৌমিক ও তপন কৃষ্ণ বণিক জানান, বাজারে চাল বিক্রি করে প্রতিটি মণ্ডপে ১৪ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। সারাদেশে তো এভাবেই চলছে।
ইউএনও আনিসুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের হাতে চালের ডিও দেওয়া হয়েছে, তবে চালের পরিবর্তে টাকা দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।
বুধবার কুমিল্লা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মনিরুল হক জানান, সরকারি বিধি অনুসারে ৮২ পূজামণ্ডপেই পৃথক ৮২টি ডিওতে চাল বিতরণ করার কথা। চালের পরিবর্তে টাকা দেওয়ার কোনো বিধান নেই। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে অভিযোগের তদন্ত প্রক্রিয়াধীন।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন