সাত বছরের ছোট্ট শিশু মরিয়ম। কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সাহেদল ইউনিয়নের বীরপাইকশা গ্রামের রিকশাচালক সিরাজুল ইসলামের মেয়ে। এই বয়সে তার লেখাপড়া আর খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকার কথা থাকলেও পরিবারের দারিদ্রতার কারণে দুই মাস আগে কুমিল্লায় এক বাসায় কাজে গিয়েছিল সে।  বুধবার ভোরে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হলো তাকে।

গৃহকর্তা এলাহি শুভ (৩৪) ও তার স্ত্রী নাদরাতুল আহমেদ (২৩) শিশুটির লাশ নিয়ে আসেন বীর পাইকশা গ্রামের বাড়িতে। প্রথমে লাশ রেখে পালাতে চাইলেও এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে তারা জানায়, পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়ে মরিয়মের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু মরিয়মের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন পরিবার এবং এলাকাবাসী। তাদের এ দাবির প্রেক্ষিতে হোসেনপুর থানা পুলিশ এলাহি শুভ ও তার স্ত্রী নাদরাতুল আহমেদকে আটক করে।

এলাহি শুভ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের ভাদুরগর পূর্বপাড়া এলাকার মৃত শাহ আলমের ছেলে। তার শ্বশুরবাড়ি হোসেনপুর উপজেলার বীরপাইকশা গ্রামে। তার স্ত্রী নাদরাতুল আহমেদ বীরপাইকশা গ্রামের নূরু মিয়ার মেয়ে। এলাহি শুভ একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন।

চাকুরির সুবাদে এলাহি শুভ তার স্ত্রী নাদরাতুল আহমেদকে নিয়ে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বুল্লিরপাড় এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। ওই ভাড়া বাসায় টুকটাক কাজের কথা বলে নাদরাতুল আহমেদ তার এলাকা থেকে দুই মাস আগে মরিয়মকে সেখানে নিয়ে যান। 

এ ব্যাপারে হোসেনপুর থানার ওসি শেখ মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান,  খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরিয়মের লাশ উদ্ধার করে এবং শুভ-নাদরাতুল দম্পতিকে আটক করে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাউদকান্দি থানায় জানানো হবে। বর্তমানে অভিযুক্ত স্বামী-স্ত্রী পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।