আলোচিত পায়েল হত্যা মামলার রায় রোববার ঘোষণা করা হবে। ঢাকা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মোহাম্মদ কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করবেন। পায়েল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। হানিফ পরিবহনের গাড়ি চালক, হেলপার ও সুপারভাইজার তাকে নির্মমভাবে খুন করে লাশ নদীতে ফেলে দিয়েছিলে।

২০১৮ সালের ২১ জুলাই রাতে দুই বন্ধু আকিবুর রহমান আদর ও মহিউদ্দিন শান্তর সঙ্গে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পথে রওনা হওয়ার পর নিখোঁজ হন সাইদুর রহমান পায়েল। ২৩ জুলাই মুন্সিগঞ্জ উপজেলার ভাটেরচর সেতুর নিচের খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে গজারিয়া থানা পুলিশ।

পায়েলের লাশ উদ্ধারের পরদিন ২৪ জুলাই তার মামা গোলাম সরওয়ার্দী বিপ্লব বাদী হয়ে হানিফ পরিবহনের চালক, সহকারী ও সুপারভাইজারকে আসামি করে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর হানিফ পরিবহনের ওই বাসের সুপারভাইজার জনিকে ঢাকার মতিঝিল এবং চালক জামাল হোসেন ও তার সহকারী ফয়সাল হোসেনকে আরামবাগ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে জামাল হোসেন ও ফয়সাল হোসেন দুই ভাই। পায়েলকে খুন করার আদ্যপান্ত জানিয়ে এদের দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

পায়েলের বাবা গোলাম মাওলা বলেন, ছেলেকে হারিয়ে গত দু বছর আদালতের দ্বারে দ্বারে কাটিয়েছি। দীর্ঘ আইনি এখন শেষ পর্যায়ে। ১ নভেম্বর মামলার রায় দেবেন বিচারক।

মামলার পিপি আবু আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল আদালতে চলা মামলাটির অনেক অগ্রগতি হয়েছিল। ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণও সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু আসামি পক্ষের আবেদনে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। পরে মামলাটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। 

বাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার খান খালিদ আদনান বলেন, আসাসিরা বিচার বিলম্বিত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আদালত তাদের কোনো সুযোগ দেয়নি। ১ নভেম্বর হবে আলোচিত এই মামলার রায়।

মামলার বাদি গোলাম সরওয়ার্দী বলেন, গত বছরের ২১ জুলাই চট্টগ্রাম থেকে হানিফ পরিবহনের ভলবো বাসে করে ঢাকা রওনা করে পায়েল। পর দিন ২২ জুলাই ভোরে সে রাস্তায় বাস থেকে প্রস্রাব করতে নামে। বাসে ওঠার সময় দরজার সাথে ধাক্কা লেগে আহত হয় পায়েল। ‘দায় এড়াতে’ চালক, সহকারী ও সুপারভাইজার মিলে আহত পায়েলের মুখ থেঁতলে দিয়ে নদীতে ফেলে দেন বলে অভিযোগ করেন। পায়েল হত্যা মামলায় গজারিয়া থানা পুলিশ বাসের সুপারভাইজার জনি, চালক জামাল হোসেন ও তার সহকারী ফয়সাল হোসেনকে আসামি করে গত ৩ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।