ঢাকা বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর

দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে মসজিদে ১১ দিন ধরে তালা

দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে মসজিদে ১১ দিন ধরে তালা

মসজিদে তালা দেওয়ার ঘটনায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন কয়েকশ এলাকাবাসী। ছবি: সমকাল

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৩ | ১৬:৩৫ | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৩ | ১৬:৩৫

আয়-ব্যয়ের হিসাব চাওয়ার জের ধরে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের একটি জামে মসজিদে তালা ঝোলানোর তথ্য পাওয়া গেছে। বুধবার সকালে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পিঁয়াজচর জামে মসজিদের সামনে এক মানববন্ধনে এসব অভিযোগ তোলেন বক্তারা। তারা বলেন, ১১ দিন ধরে সেখানে নামাজ আদায় করতে পারছেন না মুসল্লিরা। আজানও দেওয়া যাচ্ছে না। 

বক্তাদের ভাষ্য, আনুমানিক ৩৫ বছর আগে পিঁয়াজচর গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের দান করা জমিতে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়। মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন আয়নাল হক। তিনি ১২ বছরেও আয়-ব্যয়ের কোনো হিসাব দেননি। এ বিষয়ে সম্প্রতি এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষর নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও থানায় অভিযোগ দেন দাতা সদস্য নুর আলম সিদ্দিকী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আয়নাল কাজী।

তারা বলেন, ১ অক্টোবর আয়নাল কাজী, মসজিদ কমিটির উপদেষ্টা কাঞ্চন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক কাঞ্চন বিশ্বাসের ছেলে জুলহাস বিশ্বাস ও কোষাধ্যক্ষ সামসুল দেওয়ান মসজিদটিতে তালা ঝুলিয়ে দেন। এর পর থেকেই নামাজ আদায় করতে পারছেন না মুসল্লিরা। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গ্রামের দুই পক্ষে বিবাদ চলছে। 

দাতা সদস্য নুর আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘মসজিদের ১২ বছর ধরে আয়-ব্যয়ের কোনো হিসাব নাই। হিসাব চাইলে সভাপতি আয়নাল হক হুমকি-ধমকি দেন। এ বিষয়ে অনেকবার বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। ১৫ সেপ্টেম্বর আমি ইউএনও ও থানায় লিখিত অভিযোগ দিই। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদে তালা দিয়েছে।’ এমনকি তাদের পক্ষের ১২ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলাও দেওয়া হয়েছে।

ওই গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, ‘১১ দিন ধরে তালা ঝুলছে। আমরা নামাজ পড়তে পারছি না, আজান হচ্ছে না। মসজিদের হিসাব চাওয়ায় মুসল্লিদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। তারা মসজিদের মাইক খুলে নিতেও এসেছিল।’

শুক্রবারের জুমার নামাজের জন্য অন্য এলাকা থেকে ইমাম আনা হয়েছিল জানিয়ে নওয়াব আলী বলেন, ‘আমরা ছাদে জুমার নামাজ আদায় করেছি। নিয়মিত নামাজ বাড়িতেই পড়তে হচ্ছে।’ তিনি এতে জড়িত সবার বিচার দাবি করেন।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাব আলী বলেন, ১২ বছরেও আয়-ব্যয়ের হিসাব দেননি সভাপতি আয়নাল কাজী। হিসাব চাওয়ায় মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। এমনকি মসজিদে তালাও দিয়েছেন। 

এ বিষয়ে আয়নাল কাজী বলেন, ‘আমি সাভারে থাকি। চাবি আমার বোনজামাই লোকমানের কাছে আছে।’ ১২ বছর ধরে হিসাব না দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে তালা দেওয়ার ঘটনাকে ন্যক্কারজনক হিসেবে উল্লেখ করেন হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহরিয়ার রহমান। তিনি বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে সমাধানে দুই পক্ষকে নিয়ে বসতে ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেছেন। 

আরও পড়ুন