চট্টগ্রামের সিআরবিতে জোড়া খুন মামলার অন্যতম আসামি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাইফুল আলম লিমনকে গ্রেপ্তার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। 

শুক্রবার ভোরে নগরের মেহেদীবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সিআরবি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তার এক সহযোগীকে বিদেশি পিস্তলসহ গ্রেপ্টার করা হয়।

লিমন ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক। সিআরবি জোড়া খুনের পর তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে নগরের রাজনীতিতে পরিচিত লিমন সম্প্রতি যুবলীগের কমিটিতে জায়গা করে নিতে তৎপর হয়ে ওঠেন।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার আলী হোসাইন সমকালকে বলেন, আদালতে আসামির ওপর হামলা, চাঁদাবাজি, কিশোর গ্যাংয়ের মদদদাতাসহ নানা অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সহযোগী সজল দাশকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সজল জানিয়েছে, অস্ত্রটি লিমনের। এটি তাকে রাখতে দেওয়া হয়েছিল। দু'জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। আদালতে আসামির ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায়ও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

পুলিশ সূত্র জানায়, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করেন যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও সাইফুল আলম লিমন। ২০১৩ সালের ২৪ জুন নগরের সিআরবিতে কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে শিশুসহ দু'জন খুন হয়। এ মামলার অন্যতম আসামি লিমন।

বছরখানেক আগে সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু হলে বিদেশে পাড়ি জমান বাবর। গা-ঢাকা দেন লিমনও। সম্প্রতি নগর যুবলীগের কমিটি গঠন নিয়ে তোড়জোড় শুরু হলে প্রকাশ্যে আসেন তিনি। বাবরের অনুপস্থিতিতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের টেন্ডারে একাধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালান। সিআরবি, কদমতলী, আমবাগান, টাইগারপাস, আগ্রাবাদসহ নগরের বিভিন্ন এলাকায় তার গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে।

নগর পুলিশের উপকমিশনার আলী হোসাইন সমকালকে বলেন, রেলওয়ের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে আবারও সক্রিয় হয়ে ওঠার অভিযোগ রয়েছে লিমনের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া তার আধিপত্য আছে যেসব এলাকায়, সেখানে নির্মাণাধীন ভবন থেকে তার অনুসারীরা চাঁদাবাজি করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্তে এসব অভিযোগ সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। 

এ ছাড়া গত ১২ অক্টোবর নগর ছাত্রলীগের সহসম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলার আসামি মোক্তার হোসেন আদালতে হাজিরা দিয়ে বের হওয়ার সময় মামলার অন্য আসামিরা তার ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায়ও লিমনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।