করোনা পরিস্থিতিতে বরিশাল নগরীর কাউনিয়া মহাশ্মশানে শুক্রবার সংক্ষিপ্ত পরিসরে অনুষ্ঠিত হবে দীপাবলি উৎসব। ২০০ বছরের ইতিহাসে এখানে এবার সংক্ষিপ্ত পরিসরে অনুষ্ঠিত হবে দীপাবলি উৎসব।

উপমহাদেশে একমাত্র এই মহাশ্মশানে ২০০ বছর ধরে দীপাবলি উৎসব উদযাপিত হয়। প্রতি বছর কালি পূজার আগের দিন ভূত চর্তুদশীর পূণ্য তিথিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তাদের প্রয়াত স্বজনদের সমাধিতে দীপ জ্বেলে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ উৎসবে যোগ দিতে প্রতি বছর প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে শত শত মানুষ আসেন তাদের প্রয়াত স্বজনদের সমাধিতে আলোকিত শ্রদ্ধা নিবেদন করতে।

দীপাবলি উৎসব উপলক্ষে প্রতি বছর মহাশ্মশান রক্ষা কমিটি দু’দিনব্যাপী মেলার আয়োজনসহ পুরো মহাশ্মশান ঘিরে তোরণ নির্মাণ এবং আলোকসজ্জা করা হয়। অতীতে দীপাবলির দিন বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হিন্দু ধর্মের মানুষসহ সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামত মহাশ্মশানে। কিন্তু এ বছর করোনার কারণে মহাশ্মশান রক্ষা কমিটি সংক্ষিপ্ত পরিসরে দীপাবলি উৎসব পালনের উদ্যোগ নিয়েছে।

বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুখার্জি জানান, এ বছর দীপাবলি উৎসবে দু’দিনের মেলা থাকছে না। নির্মাণ করা হবে না তোরণ। কমিটির পক্ষ থেকে আলোক সজ্জাও করা হবে না, বরং মহাশ্মশানে প্রবেশ করতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যদি কেউ মাস্ক পরে না আসেন, তাহলে তাকে মাস্ক সরবরাহ করা হবে। হাত ধোয়ারও ব্যবস্থা রাখা হবে। এ ছাড়াও দু'টি জীবাণুনাশক টানেল বসানো হবে শ্মশানে ঢোকার দুই প্রবেশ মুখে। সার্বক্ষণিক মাইকে প্রচার করা হবে- দূরত্ব বজায় রেখে স্বজনদের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্য।

মানিক মুখার্জি বলেন, এ বছর করোনা প্রেক্ষাপটে ভারতীয় নাগরিকরা হয়তো প্রতি বছরের ন্যায় দীপাবলি উৎসবে অংশ নিতে পারবেন না।

এদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, দীপবলি উৎসবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুরো মহাশ্মশান এলাকায় ২০টি সিসি ক্যামেরা দিয়ে নজরদারি করা হবে। ১৫০ জন পোশাকধারী পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবেন মহাশ্মশানে। এ ছাড়াও র‌্যাবের একাধিক টিম নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবেন। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সঙ্গে মত বিনিময় করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দীপাবলি উৎসব উদযাপনের জন্য আহ্বান জানান।