- সারাদেশ
- অপহরণ মামলায় সাক্ষী হওয়ায় কুপিয়ে জখম
অপহরণ মামলায় সাক্ষী হওয়ায় কুপিয়ে জখম

কসবায় হিন্দু পরিবারের এক কিশোরী অপহরণ মামলা ও সাধারণ ডায়েরিতে সাক্ষী হওয়ায় শাহীন শিকদার নামে এক অটোচালককে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে অপহরণকারীরা। তারা ওই হিন্দু পরিবারটিকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এ ছাড়া পুড়িয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে কসবা থানায় অভিযোগ করা হলেও পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এতে প্রায় ৪০টি সংখ্যালঘু পরিবারের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জানা যায়, উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামের প্রদীপ দেবনাথের স্কুলছাত্রী মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায় একই গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে মেহেদি হাসান মামুন। এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি ও মামলা হলে শাহীন সিকদার হিন্দু পরিবারটির পক্ষে সাক্ষ্য দেন। পুলিশ ওই দুর্বৃত্তদের অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এতে অপহরণকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে শাহীন সিকদারকে সোমবার রাত ৮টার দিকে জামাল মিয়ার দোকানের সামনে হুমায়ুন, বাছির, জয়নাল, স্বপন, জামাল, সোহেল ও মামুন নামে কয়েকজন বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। শাহীনের আর্তচিৎকারে তার স্ত্রী শান্তা আক্তার এসে তাদের হাতে-পায়ে ধরলেও কাজ হয়নি। পিটুনির এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে মৃত ভেবে ফেলে চলে যায় হামলাকারীরা। পরে অপহরণকারীরা প্রদীপ দেবনাথের বাড়িতে হামলা করতে যায়। বাড়িতে গিয়ে প্রদীপ দেবনাথ ও তার স্ত্রীকে খোঁজাখুঁজি করে তারা। এ সময় প্রদীপ ও তার স্ত্রী কসবায় ছিলেন। আহত শাহীনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলেও অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত শাহীন বলেন, কেন সাক্ষ্য দিলাম- এ কথা বলেই হামলা চালানো হয়। ওরা আমার স্ত্রীর গায়েও হাত তুলেছে। শাহীনের স্ত্রী শান্তা বলেন, আক্রমণকারীরা বলেছে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে। না গেলে হিন্দুদের সঙ্গে আমাদেরও পুড়িয়ে মেরে ফেলবে।
এ বিষয়ে প্রদীপ দেবনাথ ও তার স্ত্রী রত্না দেবনাথ জানান, আদালতের মাধ্যমে তাদের মেয়েকে টাঙ্গাইলে এনে ভারতেশ্বরী হোমসে ভর্তি করা হয়। করোনার কারণে কুমিল্লায় আত্মীয়ের বাড়িতে রাখা হয়েছিল তাকে। সেখান থেকে জয়নাল ও তার ছেলেরা পুনরায় মেয়েকে নিয়ে যায়। এর পর তারা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
জানা যায়, আসামিরা মাদক ব্যবসায়ী। ২০১৪ সালে তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই রেললাইন উপড়ানো, গাছ কাটাসহ নাশকতার মামলা রয়েছে।
কসবা থানার ওসি মোহাম্মদ লোকমান হোসেন জানান, এ ব্যাপারে থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। একই গ্রামের শিক্ষক ও আওয়ামী লীগ নেতা উত্তম চক্রবর্তী জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে তারা উভয় পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন বলেন, সন্ত্রাসী যেই হোক তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
মন্তব্য করুন