স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমরা করোনাভাইরাসের টিকার ব্যবস্থা করেছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং দেশের ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদন পেলে আগামী জানুয়ারির শেষের দিকে কিংবা ফেব্রুয়ারির শুরুতে করোনার টিকা বাংলাদেশে আসবে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি তদারকি করছেন। 

বুধবার দুপুরে মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে করোণাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারায় বিশ্ব অবাক হয়েছে। সারা পৃথিবীর মানুষ শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাসচিবও প্রশংসা করেছেন।' 

জাহিদ মালেকের প্রয়াত বাবার নামে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবেগপ্লাবিত হয়ে পড়েন মন্ত্রী। তিনি বলেন, '২০০০ সালে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল বলেই আমার বাবা বিনাচিকিৎসায় মারা যান। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই স্বপ্ন আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করতে চলেছেন। বাংলাদেশের একজন মানুষও চিকিৎসার বাইরে থাকবে না। প্রতিটি জেলায় একটি করে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হবে। বাংলাদেশে আজ কোনো খাদ্যের অভাব নেই। প্রতিটি বাড়ি বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত। অবকাঠামোগত অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। দেশ এখন মধ্যমআয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়ে গেছে।'

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'করোনায় সারা পৃথিবীর অর্থনৈতিক অবস্থা যখন বিপর্যস্ত সেই মুহূর্তে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সূচকে ১৫ ভাগ এগিয়ে আছে। অথচ আমেরিকা ৫ ভাগ, ভারত ৭ ভাগ মাইনাসে চলে গেছে। ইউরোপ বন্ধ হয়ে গেছে, সেখানে লগডাউন চলছে। বাংলাদেশের উন্নতির চাকা অব্যাহত রয়েছে। পুরো বাংলাদেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে। দেশের সবকিছু চালু আছে।'

বিএনপি ও জামায়াত জোটের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'তারা দেশের উন্নয়নকে ভালো চোখে দেখছে না। তারা দেশের অগ্রযাত্রাকে মেনে নিতে পারেছে না। বসন্তকে যেমন ঠেকানো সম্ভব নয়, তেমনি শেখ হাসিনার উন্নয়নকে ঠেকানো সম্ভব নয়। সমগ্র বাংলাদেশ এখন শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে। আমরা করোনা নিয়ন্ত্রণ করেছি। স্বাস্থ্যসেবা ঘরের দৌরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি।'

মন্ত্রী আরও বলেন, 'বিএনপি দুর্নীতিতে ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। বিদ্যুৎখাতে সীমাহীন দুর্নীতির ফলে সেই সেক্টর প্রায় শেষ করে দিয়েছিল তারা। আমরা কিন্তু ভুলে যাইনি বাংলা ভাইসহ শায়েক আব্দুর রহমানের কথা। আবারও সেই জোট মাথাচারা দিতে শুরু করেছে। সেই মৌলবাদী শক্তিকে বাংলাদেশে প্রশ্রয় দিতে পারি না আমরা। বাংলাদেশ আর পেছনের দিকে যাবে না। বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।'

কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিভাগের সচিব আলীনুর বিশ্বাস, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশেদ আলম,বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মবিন খান, কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের প্রকল্প পরিচালক খান মোহাম্মদ আরিফ, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম প্রমুখ।