দৈনিক সমকালে সংবাদ প্রকাশের পর জামালপুরের বকসীগঞ্জের ভারতীয় সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের বাসিন্দা মান্দি (গারো) নারী লিবিটা সাংমার দায়িত্ব নিয়েছেন ধানুয়া কামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল। মঙ্গলবার বিকেল তিনটার দিকে অসহায় লিবিটা সাংমাকে দেখতে ও তার সার্বিক খোজ খবর নিতে গারো পাহাড়ের দিঘলা কোনা এলাকায় যান চেয়ারম্যান।

এসময় ব্যক্তিগতভাবে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, লবণ, তেল, কম্বল, শাড়ি ও নগদ অর্থ তুলে দেন লিবিটার হাতে। এছাড়াও তার ভরণপোষণের সকল দায়িত্ব নেন চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল।

গত ১৯ ডিসেম্বর দৈনিক সমকালে 'ভাতা পান না ৮৫ বছরের লিবিটা সাংমা' শিরোনামে একটি স্বচিত্র সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নজরে আসে। মঙ্গলবার ইউপি চেয়ারম্যান লিবিটা সাংমাকে দেখতে দিঘলা কোনা এলাকায় তার বাড়িতে যান। এছাড়াও ইউএনও মুনমুন জাহান লিজা লিবিটা সাংমার জন্য বয়স্ক কিংবা প্রতিবন্ধী ভাতা এবং একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, এতদিন বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। দৈনিক সমকালে সংবাদ প্রকাশের পরই বিষয়টি আমার নজরে আসে। মানবিক কারণে আমি ব্যক্তিগতভাবে তাকে কিছু সহযোগীতা করেছি। পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এবং আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকেও তাকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে। এখন থেকে তার সকল দায়িত্বই আমি নিয়েছি।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে লিবিটা সাংমার স্বামী অন্যাত্র বিয়ে করে তাকে ছেড়ে চলে যান। এরপর এক সন্তান নিয়ে বেচেঁ থাকার চেষ্টা চালিয়ে যান লিবিটা। কিন্তু সন্তানও তাকে ছেড়ে পরপারে চলে যায়। স্বামী, সন্তান, সংসার না থাকায় উপজেলার ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের দিঘলাকোনা গারোপাহাড়ে ছোট বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেন লিবিটা। ছোট বোনের বাড়ির জরাজীর্ণ ঘরে জীবন কাটে তার। বয়সের ভারে চলাফেরা করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে, তবুও জীবিকার সন্ধানে প্রতিদিন অতি কষ্টে উচুঁ নিচু টিলা পেরিয়ে লাউচাপড়া পর্যটন বিনোদন কেন্দ্রে গিয়ে ভিক্ষা করেন তিনি।

করোনার কারণে পর্যটন কেন্দ্রে জনসমাগম কম হওয়ায় ভিক্ষাও তেমনটা পান না। ফলে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটে তার। তাছাড়া বয়সের ভারে নানা রোগ বাসা বেধেঁছে শরীরে। গত প্রায় ৫ বছর আগে মানসিক ভারসাম্যও হারিয়েছেন তিনি।