ঢাকা রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগে যোগ দিচ্ছেন লতিফ সিদ্দিকী!

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগে যোগ দিচ্ছেন লতিফ সিদ্দিকী!

আবদুল লতিফ সিদ্দিকী

আবদুর রহিম, টাঙ্গাইল

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৩ | ০১:০৫ | আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৩ | ০১:০৫

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী দীর্ঘদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে তিনি ফের নিজের নির্বাচনী এলাকা টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে গণসংযোগ শুরু করেছেন। সম্প্রতি তিনি তাঁর ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে দলটির সভা-সমাবেশে অংশ নিয়েছেন।

টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কালিহাতীসহ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সব সভায় তাঁকে গলায় গামছা জড়িয়ে যোগ দিতে দেখা গেছে। লতিফ সিদ্দিকী কি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগে যোগ দিচ্ছেন? এ প্রশ্ন টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। তাঁর ভাই কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন যে জোট হতে যাচ্ছে, সেখানে তিনি প্রার্থী হতে পারেন– এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। 

এ ব্যাপারে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ছোট ভাই কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে আমি এক মঞ্চে তখনই বসেছি, যখন তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটা আলোচনা হয়েছে। আমি বুঝতে পারছি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে। আগামী নির্বাচনে কাদের সিদ্দিকী শেখ হাসিনাকে অকুণ্ঠ সমর্থন করবে– এ শর্তেই তার পাশে আমি আছি। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করি, আমি আওয়ামী লীগার। আমি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটভুক্ত যে কোনো দলের সভায় যেতে পারি। 

পাঁচ বছর নিষ্ক্রিয় থাকার পর গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০-২৫টি গাড়ি ও শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে দেলদুয়ারে শাহান শাহ আদম কাশ্মীরির মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে গণসংযোগ শুরু করেন তিনি। ইতোমধ্যে তিনি কালিহাতীতে পাঁচ থেকে ছয়টি সভা করেছেন। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে একটি সভায় হজ, তাবলিগ জামাত ও প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করে মন্ত্রিত্ব হারান লতিফ সিদ্দিকী। তখন তাঁকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। জেলায় জেলায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। দেশে ফেরার পর তাঁকে কারাগারে যেতে হয়। পরে তিনি সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় তাঁর গাড়িতে হামলার ঘটনাও ঘটে।

হঠাৎ তিনি আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। আওয়ামী লীগে ফেরার কোনো ইঙ্গিত পেয়েছেন কিনা– সমকালের এমন প্রশ্নে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘না, এ রকম কোনো ইঙ্গিত আমি পাইনি। দলে ফেরা নিয়ে আওয়ামী লীগের কারও সঙ্গে আমার আলোচনা হয়নি।’ নির্বাচন সামনে রেখে হঠাৎ করে আবার কেন রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হয়েছেন– এমন প্রশ্নের তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাকে বাদ দিলেও আমি এখনও মনেপ্রাণে আওয়ামী লীগার। বর্তমান সরকারের প্রতি বিএনপি-জামায়াতের হুমকির বিরুদ্ধে আমি মাঠে এসেছি। নির্বাচন করার জন্য আসিনি। বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে, তারা শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করবে। আমি মনে করি, এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা আমার দায়িত্ব। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই আমি এসেছি। আমি নির্বাচন করতে আসিনি।’

লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ১৯৭৩, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে তাঁকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী করা হয়। পরে ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন। সে সময় তিনি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। 

আরও পড়ুন

×