নাশকতার ‘গায়েবি’ মামলায় আ.লীগ নেতা কারাগারে

রূপসা থানা
খুলনা ব্যুরো
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৩ | ১৫:২২ | আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৩ | ২১:২২
খুলনার রূপসায় পুলিশের নাশকতা মামলায় আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রোববার রাতে তাঁকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন রূপসা থানায় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে করা নাশকতার একটি ‘গায়েবি’ মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
ভুক্তভোগী আওয়ামী লীগ নেতার নাম হান্নান শেখ। তিনি শ্রীফলতলা ইউনিয়নের ৪ নম্বর বাধাল ওয়ার্ড কমিটির সদস্য। হান্নানের বাবা মরহুম মুনছুর আলী শেখও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁর চাচা আবদুর রাজ্জাক শেখ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রফি মল্লিক বলেন, ‘হান্নানের বাবা-চাচাসহ সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে। আমাদের এখানে অনেক গ্রুপিং। ওরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’
গত রোববার রূপসা থানার যে মামলায় হান্নান শেখকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়, সেটিতে মোট আসামি ২২ জন। এর মধ্যে ১৪ নম্বর আসামি হান্নান শেখ। অন্য ২১ জনই স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৮ অক্টোবর দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় রূপসার আইচগাতী ইউনিয়নের রাজাপুর জয় বাংলা মাঠের পূর্ব কোণে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মী সরকার পতন ও জনগণের সম্পদ ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বিস্ফোরক দ্রব্য, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয়। রাত ৩টা ৪৫ মিনিটে পুলিশ সেখানে পৌঁছলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমাসদৃশ বস্তু ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ শটগান দিয়ে ৩ রাউন্ড গুলি ছোড়ে।
এদিকে জয় বাংলা মাঠের পূর্ব কোণ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। ওই এলাকার প্রায় ৫০টি পরিবারের কয়েকশ লোকের বসবাস। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ওই রাতে একটি বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। কিন্তু গুলি বা বোমার কোনো আওয়াজ তারা শোনেননি।
হান্নানের চাচাতো ভাই ও ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি মিজান শেখ বলেন, সকালে আমরা একসঙ্গে সরকারের উন্নয়ন প্রচারণার শোভাযাত্রায় অংশ নিই। রাতে বাড়ি ফিরে শুনি, হান্নানকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। পরদিন খোঁজখবর নিয়ে শুনি, পুলিশ অন্য গ্রুপের কাছ থেকে টাকা খেয়ে হান্নানকে ‘বিএনপি’র মামলায় চালান দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দল ক্ষমতায়, আর আমার ভাই ভুয়া মামলায় জেল খাটছে– এই দুঃখের কথা কার কাছে বলব?’
অভিযোগ অস্বীকার করে মামলার বাদী রূপসা থানার এসআই তাকবীর হোসাইন বলেন, মামলায় যাদের নাম এসেছে বা যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে; সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই করা হয়েছে। কে কোন দল করে, তা দেখার বিষয় নয়।
রূপসা থানার ওসি মো. শাহীন বলেন, ‘কতজন তো কত কথা বলে। সবার কথা ধরতে হয় না।’