ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩

বছর না পেরোতেই এমপি হতে চান মেয়র

বছর না পেরোতেই এমপি হতে চান মেয়র

মেয়র মুহিবুর রহমান

বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৩ | ১৬:৪০ | আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৩ | ২২:৪১

পৌরসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হওয়ার এক বছরের মাথায় এবার এমপি (সংসদ সদস্য) হতে চান সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার প্রথম মেয়র মুহিবুর রহমান। ২০২২ সালের ২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে ৫ হাজার ২১১ ভোটের ব্যবধানে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। তবে মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েই সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমে পড়েন। 

কয়েক মাস ধরে সিলেট-২ আসনের (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) সর্বত্র চষে বেড়াচ্ছেন মুহিবুর রহমান। গ্রামে গ্রামে গিয়ে গণসংযোগ করে জানাচ্ছেন আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজের প্রার্থী হবার কথা। বিষয়টি সোশাল মিডিয়া ফেসবুকেও প্রচার করছেন তিনি ও তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা। তবে পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েই সংসদ সদস্য পদে তাঁর নির্বাচনকে নিয়ে আলোচনা, সমালোচনারও শেষ নেই দুই উপজেলার জনসাধারণের। মেয়রের এমন প্রত্যাশাকে কেউ কেউ নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন। অনেকে আবার বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন।

জানা গেছে, ১৯৭৮ সালে বিশ্বনাথ থানা আওয়ামী লীগের তৎকালীণ অর্থ সম্পাদক এবং ১৯৮০ সালে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নির্বাচিত হন মুহিব। এরপর ১৯৮৫ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বিশ্বনাথের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখেন তিনি। এরপর ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন মুহিব। তবে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাতীয় পার্টির মকসুদ ইবনে আজিজ লামার কাছে সামান্য ভোটে হেরে যান তিনি।  ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর কাছে সামান্য ভোটে হারেন মুহিবুর।

২০০৩ সালে আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন মুহিব। এরপর ২০০৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরীকে পরাজিত করে দ্বিতীয় বারের মতো উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগত কারণে সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন মুহিব। মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা  ইয়াহইয়া চৌধুরীর কাছে পরাজিত হন। 

তারপর ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক বর্তমান সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জান চৌধুরী। ওই নির্বাচনে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে নৌকার পক্ষে প্রচারণায় নামেন মুহিব। কিন্তু শফিকুর রহমান ও আনোয়ারুজ্জামান কাউকেই দল থেকে মনোনয়ন না দেওয়া হলে নিজেই প্রার্থী হন মুহিব। ওই নির্বাচনে গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খানকে বিএনপি নেতাকর্মীরা সমর্থন দেওয়ায় আবারও হারতে হয় তাঁকে। 

এ বিষয়ে বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান সমকালকে বলেন, সংসদ নির্বাচনে যতবারই প্রার্থী হয়েছেন ততবারই ষড়যন্ত্র করে তাঁকে পরাজিত করা হয়েছে। জনগণ বারবারই তাঁকে চাচ্ছে। তাই তিনি আগামী সংসদ নির্বাচন করতে চান। আইন অনুযায়ী পৌর মেয়র পদ রেখেই সংসদ নির্বাচন করতে পারবেন জানিয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার ‘পৌরসভা’ আইনের ৩৩ ধারায় বলা আছে, কোনো মেয়র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে মেয়রের পদ শূন্য ঘোষিত হবে। জয়ের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদী মুহিব জানান, আগামী সংসদ নির্বাচনে কোনো ষড়যন্ত্রই তাঁর বিজয় আটকাতে পারবে না।

আরও পড়ুন