দুটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র জরাজীর্ণ স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

মির্জাপুরের ভাওড়া ইউনিয়নের গলচড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র জরাজীর্ণ সমকাল
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৩ | ১৮:৪১ | আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৩ | ০০:৪১
মির্জাপুরে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় দুটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এ কারণে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র দুটি হলো ভাওড়া ইউনিয়নের গলাচড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও গোড়াই ইউনিয়নের ধেরুয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভাওড়া ইউনিয়নের গলাচড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণ এ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ নেই, রোগীদের বসার ব্যবস্থা নেই, টয়লেট ও পানির ব্যবস্থা নেই। টিনশেড এ কেন্দ্রটিতে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় মেঝের পলেস্তারা উঠে গেছে। ফলে বৃষ্টির পানিতে মেঝে কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। এই কেন্দ্রে একজন মেডিকেল অফিসারের পদ রয়েছে। এ ছাড়া আছে উপসহকারী কমিউিনিটি মেডিকেল অফিসার, ফার্মাসিস্ট ও পিয়নের পদ। কিন্তু সেখানে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসককে এক বছর আগে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ওষুধপত্র দেন ফার্মাসিস্ট। এ ছাড়া অন্য কোনো সেবা মেলে না।
ফার্মাসিস্ট সঞ্জিত সরকার জানান, সাত বছর ধরে এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত তিনি। যোগদানের সময় থেকেই কেন্দ্রটির এই রুগ্ণ অবস্থা দেখে আসছেন তিনি। কেন্দ্রে প্রতিদিন এলাকার ৪০-৫০ জন মানুষ স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসেন। কিন্তু বিদ্যুৎ ও বসার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ভ্যাপসা গরমে অস্থির হয়ে পড়েন তারা।
গতকাল বেলা ১১টা নাগাদ প্রায় ৩৫ জন রোগী কেন্দ্রটিতে চিকিৎসা নিতে আসেন। তাদের মধ্যে আফজালুর রহমান, জাহানারা বেগম, আমেনা খাতুন জানান, কেন্দ্রটির দুরবস্থার জন্য তাদের অনেক কষ্ট হয়। ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা পান না তারা।
ভাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির জরাজীর্ণ অবস্থার কারণে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা লোকজনের অনেক ভোগান্তি হয়।
গোড়াই ইউনিয়নের ধেরুয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রও জরাজীর্ণ। গোড়াই শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত এ কেন্দ্রে মেডিকেল অফিসারের পদ নেই। পিয়নের পদও ফাঁকা। প্রতিদিন ৬০-৭০ জন রোগী সেবা নিতে আসেন। কিন্তু তাদের বসার ব্যবস্থা নেই। টয়লেট ও পানির ব্যবস্থা নেই। এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমির পরিমাণ ৫৩ শতাংশ। এক পাশে একটি টিনশেড ঘর থাকলেও সীমানা প্রাচীর না থাকায় অধিকাংশ জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। সেখানে এলাকার বিভিন্ন রকমের যানবাহন রেখে ও দোকানঘর নির্মাণ করে জমি বেদখল করা হয়েছে।
উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ববিতা তালুকদার ও ফার্মাসিস্ট নারায়ণ সরকার জানান, এ কেন্দ্রে পাঁচ বছর ধরে কর্মরত তারা। তাদের যোগদানের পর থেকে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রের দুরবস্থার কোনো হেরফের হয়নি। তবে গত অর্থবছরে তৎকালীন ইউএনও হাফিজুর রহমান টিআর বরাদ্দ দিয়ে টিনশেড ঘরের নষ্ট হওয়া টিনগুলো বদলানোর ব্যবস্থা করেন। এখন আর বৃষ্টির পানি পড়ে না।
উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র দুটির জরাজীর্ণ অবস্থার কথা স্বীকার করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। তাঁর দাবি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।