ঢাকা মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

করোনা শুনে পালানো নারীকে খুঁজে বের করল পুলিশ

করোনা শুনে পালানো নারীকে খুঁজে বের করল পুলিশ

সিলেট ব্যুরো

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২০ | ০৮:১৪

সিলেটে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়া প্রসূতি নারীর সন্ধান পাওয়া গেছে। দু'দিন ধরে অনেক নাটকীয়তার পর অবশেষে পুলিশের সহায়তায় তাকে নগরীর শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে আনা হয়েছে। 

শনিবার বিকেলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সহায়তায় নগরীর বিমানবন্দর থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এদিন দুপুরে সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নে কাকুয়ারপাড় গ্রামে নানার বাড়িতে ওই নারীর সন্ধান পাওয়া যায়। 

গত বুধবার ওসমানী হাসপাতালে এক সন্তানের জন্ম দেন টাঙ্গাইলের শাহীন আহমদের স্ত্রী আমিনা বেগম। তবে হাসপাতালে ভর্তির সময় স্বামীর বদলে বাবা শফিক মিয়ার মোবাইল নম্বর দেন ওই নারী। এদিকে বৃহস্পতিবার নবজাতক মারা যায় এবং আমেনার শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। এ অবস্থায় তার নমুনা সংগ্রহ করে ওসমানী হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার রাতে রিপোর্ট পজেটিভ এলে আমেনা বেগমকে খোঁজ করে হাসপাতালে পাওয়া যায়নি।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাতভর পুলিশ তাকে খোঁজাখুজি করে। এরপর শুক্রবার আমেনা বেগম নামের আরেকজনকে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কাকতালীয়ভাবে সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের রঙ্গিটিলা গ্রামের এই আমেনাও ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শুক্রবার সকালে রঙ্গিটিলার আমেনাকে হাসপাতালে আনার পর দেখা যায় ওসমানী হাসপাতাল থেকে তিনি ছাড়পত্র নিয়েই বাড়ি গিয়েছিলেন। এছাড়া তার শরীরে করোনার কোনো উপসর্গও পাওয়া যায়নি।

'আসল' আমেনা ছাড়পত্র না নিয়েই পালিয়ে গিয়েছিলেন বলে এর আগে জানান ওসমানী হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়। এ অবস্থায় রঙ্গিটিলার আমেনাকে শুক্রবার বিকেলে শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিয়ে 'আসল' আমেনার সন্ধানে নামে পুলিশ। অবশেষে শনিবার দুপুরে তারা তার সন্ধান পান বলে জানান বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহদাত হোসেন। তিনি বলেন, 'অনেক চেষ্টার পর করোনায় আক্রান্ত প্রকৃত আমেনার সন্ধান পেয়েছি।'

সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিলোয়ার হোসেন জানান, আমেনা বেগমের বাবা শফিক মিয়ার বাড়ি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে। তবে বর্তমানে তারা খদিমনগরের লাখাউড়ায় বসবাস করছেন। তিনি সিলেট আদালতের কর্মচারী। আমেনার স্বামী শাহীনের বাড়ি টাঙ্গাইলে। ওসমানী হাসপাতালে ভর্তির সময় বাবার মোবাইল নম্বর দিয়েছিলেন আমেনা। হাসপাতাল থেকে পালানোর পর ওই নম্বরও বন্ধ ছিল। শনিবার সকালে শফিক মিয়া তার মোবাইল নম্বর খোলার পর পুলিশ তাকে নিজেদের জিম্মায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। 

এ সময় শফিক মিয়া জানান, আমেনা কাকুয়ারপাড়ে নানার বাড়িতে রয়েছেন। এরপর চেয়ারম্যান দিলোয়ার হোসেনসহ পুলিশ কাকুয়ারপাড়ে আমেনার নানার বাড়িতে যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আমেনা একটি সিএনজি অটোরিকসাযোগে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ তাকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

আরও পড়ুন

×