নতুন একাডেমিক ভবনে শুরু হচ্ছে কার্যক্রম

সুনামগঞ্জে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের মূল একাডেমিক ভবন- সমকাল
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৩ | ১৭:২৭ | আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৩ | ২৩:২৭
দেশে সর্বশেষ অনুমোদিত মেডিকেল কলেজগুলোর মধ্যে সবার আগে নির্মিত হচ্ছে সুনামগঞ্জের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস। তাতে হাওরাঞ্চলবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের বাস্তবায়ন হতে চলেছে। ক্যাম্পাসের সবচেয়ে জরুরি অংশ আট তলা একাডেমিক ভবনে আজ রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ সুনামগঞ্জের ক্যাম্পাস স্থানান্তর হচ্ছে।
শেষের পর্যায়ে হওয়া দেশের মেডিকেল কলেজগুলোর মধ্যে রয়েছে– হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মাগুরা, নীলফামারী, নোয়াগাঁও, চাঁদপুর ও নেত্রকোনা মেডিকেল কলেজ। অন্য ছয়টি মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস এখনও নির্মাণ হয়নি। সুনামগঞ্জের আগে হওয়া হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জমিই নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। নেত্রকোনায় একাডেমিক ভবনের বরাদ্দ পেলেও সঙ্গে ৫০০ শয্যার হাসপাতালের বরাদ্দ এখনও হয়নি। এ ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে আছে সুনামগঞ্জের মেডিকেল কলেজটি।
এরই মধ্যে এই মেডিকেলের ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল ভবনের কাজ ৬০ ভাগের বেশি শেষ হয়ে গেছে। এই ভবনে ১০টি লিফট ও একটি বেজমেন্টসহ আধুনিক সব সুবিধাই রয়েছে। ছয় তলাবিশিষ্ট ডরমিটরি ভবনে ৭২ জন নার্সের আবাসনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। একই রকমের আরেকটি ভবনে হাসপাতালে কর্মরত ৯৮ জন মহিলা স্টাফের আবাসন ব্যবস্থা হবে। আট তলাবিশিষ্ট আরেক ভবনে নার্সিংয়ে অধ্যয়ন করবেন এমন ৪৫০ জনের আবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ছয় তলাবিশিষ্ট নার্সিং কলেজের একাডেমিক ভবন হচ্ছে। আট তলাবিশিষ্ট আরও দুটি ভবনের প্রতিটিতে আলাদা আলাদা করে ৪২০ জন করে মেডিকেল শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া পাঁচ তলার একটি ভবনে নির্মিত হচ্ছে অধ্যক্ষ ও পরিচালকের বাসভবন। ছয় তলাবিশিষ্ট দুটি ডরমিটরিতে আলাদা আলাদা করে ১৪০ জন করে চিকিৎসকের আবাসনের ব্যবস্থা হবে। এ ছাড়া ১০ তলাবিশিষ্ট ভবনে ১৪০ জন ডাক্তারের আবাসন ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এর পাশাপাশি রয়েছে দ্বিতলবিশিষ্ট জিমনেশিয়াম, লন্ড্রি ভবন, চার তলার মসজিদ ও ৭৩০ আসনের অডিটোরিয়াম।
সুনামগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় আশরাফুল ইসলাম জানান, একাডেমিক ভবনের ৯৫ ভাগ শেষ হয়েছে। অন্য ভবনগুলোর কাজও ৬৫ ভাগ শেষ। নতুন মেডিকেল কলেজগুলোর মধ্যে আগে ক্যাম্পাস নির্মিত হচ্ছে সুনামগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের। একাডেমিক ভবনের কাজ ৯৫ ভাগ শেষ হওয়ায় অস্থায়ী ক্যাম্পাস থেকে রোববার নতুন একাডেমিক ভবনে আসবে কলেজের কার্যক্রম।
হাওরের রাজধানীখ্যাত সুনামগঞ্জের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে তিন বছর আগে থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হয়। ৫০ জন করে প্রতি বছর এখানে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। শান্তিগঞ্জ উপজেলার ৫০ শয্যা হাসপাতাল ভবনে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের অস্থায়ী ক্যাম্পাস চলছিল গত তিন বছর ধরে।
শিক্ষাবিদ পরিমল কান্তি দে জানান, বড় এই প্রকল্পটির কার্যক্রম শেষের পথে। আজ একাডেমিক ভবনে শিক্ষার্থী উঠবে শুনে আনন্দিত সবাই।
সুনামগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মনোজিৎ মজুমদার জানান, তিনটি সেশনের শিক্ষার্থীকে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে পাঠদান করানো হয়েছে। আগামী সেশন থেকে ৭৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হবে। বড় ও নান্দনিক ক্যাম্পাসে আগ্রহভরে আসবে নতুন শিক্ষার্থীরা।
মেডিকেল কলেজের প্রকল্প পরিচালক শামস উদ্দিন আহমেদ জানান, এই প্রকল্পটির মোট ৬৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবনের কাজ প্রায় ৯৫ ভাগ শেষ। প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পুরো প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করা সম্ভব হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বললেন, সুনামগঞ্জবাসীর জন্য আনন্দের বিষয় এটি। সুনামগঞ্জ এখন আর অবহেলিত নয়। এখানকার মানুষের মেডিকেল কলেজের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।