ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩

ধলেশ্বরীর ভাঙন থেকে বাঁচার আকুতি

ধলেশ্বরীর ভাঙন থেকে বাঁচার আকুতি

সিরাজদীখানের ডাকেরহাটি গ্রামে ভাঙছে ধলেশ্বরীর তীর -সমকাল

সিরাজদীখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৩ | ১৭:৫৮ | আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৩ | ২৩:৫৮

বছরখানেক ধরে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে ভাঙনের কবলে পড়েছেন দুটি গ্রামের মানুষ। চলতি বছরই বসতভিটা, ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ণ এলাকা ধলেশ্বরীতে বিলীন হয়েছে। এর মধ্যে পড়েছে একটি বৈদ্যুতিক টাওয়ারও। এখনও উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের ডাকেরহাটি ও তুলশীখালী গ্রামে ভাঙন চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভিটা ও জমি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন গ্রাম দুটির বাসিন্দারা। গতকাল শনিবার বিকেলে এক মানববন্ধনে এমন দাবি তুলে ধরেন তারা। 

তুলশীখালী বাজার সড়কের এ মানববন্ধনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতাদের পাশাপাশি বক্তব্য দেন ভুক্তভোগী ব্যক্তিরাও।

নদী-লাগোয়া ৩৩ শতাংশ জমি ছিল ডাকেরহাটি গ্রামের রানু বেগমের। চলতি বছরের ভাঙনে তাঁর ৩০ শতাংশই হারিয়েছেন। যে ৩ শতাংশ জমি রয়েছে, সেখানে ঝুঁকি নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। রানু বেগম মানববন্ধনে বলেন, ‘এক বছর ধরেই আমাদের এলাকায় ধলেশ্বরীর ভাঙন তীব্র রূপ নিয়েছে। বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে।’ ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
একই গ্রামের মোফসের হোসেন বলেন, ‘আগেই আমার ৪ শতাংশ জমিসহ বাড়ি নদীতে ভেঙে গেছে। নতুন করে যে বাড়ি করেছি, সেটি নিয়েও ভয়ে আছি।’

ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তুলশীখালীর জাফর মিয়াও। তিনি বলেন, ‘আমার ৬ শতাংশের বসতভিটা নদীতে গেছে। ভিটেমাটি হারিয়ে এখন ভাড়া বাসায় থাকি।’ সরকারের কাছে মাথা গোঁজার জায়গা দেওয়ার আকুতি জানান জাফর।

গ্রাম দুটি পড়েছে চিত্রকোট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। স্থানীয় ইউপি সদস্য শহীদুল খান মানববন্ধনে বলেন, প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ধলেশ্বরীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে ৪০টিরও বেশি পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়েছে। তারা এখন দিশেহারা। এখনও শতাধিক পরিবার ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। আমন ধানের ক্ষেতসহ শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হওয়ার পথে।
তিনি মনে করেন, এভাবে ভাঙন চলতে থাকলে অচিরেই গ্রাম দুটি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সামছুল হুদা বাবুল বলেন, ধলেশ্বরী তীরের মানুষের দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভাঙন। দিন দিন সর্বস্ব হারানো মানুষের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। ভাঙন রোধে উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

আরও বক্তব্য দেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী ইয়াকুব হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক নুর আলম, হাউজিং কোম্পানি তুলশী রিভার ভিউয়ের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোক্তার হোসেনসহ বিশিষ্টজন।

সিরাজদীখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ ভাঙনকবলিত এলাকা সরেজমিন পরিদর্শনের আশ্বাস দিয়েছেন। শনিবার তিনি বলেন, পরে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।

আরও পড়ুন