অবরোধের সমর্থনে যশোরে ৩ সরকারি কলেজের ফটকে ছাত্রদলের তালা
এমএম কলেজের প্রধান ফটক। ছবি: সমকাল
যশোর অফিস
প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৩ | ০৮:৩০ | আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৩ | ১৪:৩১
যশোরে সরকারি তিনটি কলেজের বিভিন্ন ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। দেশব্যাপী বিএনপির ডাকা দ্বিতীয় দফার দুইদিনের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে রোববার গভীর রাতে এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ‘রাষ্ট্র মেরামতের কাজ চলতেছে, সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখিত’ লেখা সম্বলিত একটি ব্যানারও টানিয়ে দেন তারা। সোমবার সকালে তালা ভেঙে ও ব্যানার খুলে সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয় (এমএম কলেজ), যশোর সরকারি সিটি কলেজ, যশোর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কলেজের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন বিভাগের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। রোববার গভীর রাতে নেতাকর্মীরা এসে প্রতিটি গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার সঙ্গে ‘রাষ্ট্র মেরামতের কাজ চলছে, সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখিত’ লেখা সম্বলিত একটি করে ব্যানার ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার পর প্রধান ফটকগুলো সকাল পর্যন্ত বন্ধ ছিল। পরে সকাল ৬টার দিকে ফটকের তালা ভেঙে যাতায়াতের ব্যবস্থার সুযোগ তৈরি করে দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা কলেজের প্রধান ফটকে তালা দিলেও কোনো প্রভাব পড়েনি। স্বাভাবিক দিনের মতো কলেজগুলোতে ক্লাস, পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয় কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, রাতের আধারে ফটকে তালা ব্যানার সাঁটানো হয়েছিল। সকালে সেগুলো খুলে ফেলা হয়েছে। স্বাভাবিক দিনের মতো কলেজে সব কার্যক্রম চলছে।
এদিকে বিএনপির দ্বিতীয় দফায় অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে যশোর জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষিপ্তভাবে মিছিল করেছে। সোমবার ভোরে যশোর বেনাপোল সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধের চেষ্টা করে। এছাড়া শহরের বিভিন্ন গলি, যশোর চৌগাছা সড়ক, যশোর মাগুরা সড়কে ঝটিকা মিছিল করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। অবশ্য খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে মিছিলটি কয়েকশ গজ গিয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং দলটির নেতাকর্মীরা স্থান ত্যাগ করে চলে যান।
তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় এসব কর্মসূচিতে দলের শীর্ষ নেতাকর্মীদের উপস্থিতি কম লক্ষ করা গেছে।
এদিকে সকালে যশোর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রী কম থাকায় যশোর বাস টার্মিনাল থেকে কোনো রুটে নির্ধারিত সময়ে বাস ছাড়তে পারছেন না চালকরা। ফলে মহাসড়কে যান চলাচল অনেক কম। তবে সড়কে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। বিএনপির অবরোধ চলাকালে নাশকতা এড়াতে জেলাজুড়ে ৯ শতাধিক পুলিশ সদস্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে যশোর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইন জানিয়েছেন।
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, বিএনপির চলমান হরতাল অবরোধ কর্মসূচি ঘিরে মামলায় গ্রেপ্তার যশোর বিএনপির নেতাকর্মীরা। গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া হরতাল আর অবরোধ কর্মসূচিতে ২২ মামলায় আসামি করা হয়েছে দেড় সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে। এসব মামলায় আটক করা হয়েছে সাড়ে চারশ’ নেতাকর্মী। গ্রেপ্তার আতঙ্কে বর্তমানে ঘরছাড়া জেলা বিএনপির শীর্ষনেতাসহ অন্তত পাঁচ হাজার নেতাকর্মী। এতে এসব নেতাকর্মীর পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার পাশাপাশি মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।