ঢাকা বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

জাপা নেতার পা বিচ্ছিন্ন নেপথ্যে সাবেক ওসি

জাপা নেতার পা বিচ্ছিন্ন নেপথ্যে সাবেক ওসি

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান শফিকুল ইসলাম -সমকাল

পিরোজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৩ | ১৮:০৯ | আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৩ | ০০:০৯

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি মো. নুরুল ইসলাম বাদলের ইন্ধনে উপজেলা জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলামের পা কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার সকালে পিরোজপুর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শফিকুল ইসলাম বলেন, মঠবাড়িয়া থানায় কর্মরত থাকাকালে ওসি নুরুল ইসলাম বাদল আমাকে ২০২১ সালের ২১ জুলাই সন্ধ্যায় এসআই পলাশ চন্দ্র রায়ের মাধ্যমে থানায় ডেকে নেন। ওসির রুমে রাত ১১টার দিকে থানার দালাল সগির মেম্বার এবং তুষখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ছেলে শামীম আহমেদ আমাকে ওসির সামনে মারধর করেন। পরে সগির মেম্বারের কথায় আমাকে মিথ্যা মামলায় জেলহাজতে পাঠান। 

২১ দিন হাজতবাস করে বের হওয়ার পরেও বিভিন্ন সময়ে তিনি (ওসি) আমাকে নানাভাবে হয়রানি করতে থাকেন। এসব বিষয়ে আমি পরবর্তী সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইজিপি, ডিআইজির কাছে লিখিত অভিযোগ দিই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওসি বাদল ২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আমাকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেন এবং বলেন যে, ‘সব অভিযোগ তুলে না নিলে কুপিয়ে আমার হাত-পা কেটে ফেলা হবে।’ এমনকি প্রাণেও মেরে ফেলার হুমকি দেন। 

শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, হুমকির দু’দিন পরে ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওসি বাদলের ইন্ধনে এবং সগির মেম্বারের নেতৃত্বে ছয়-সাত সন্ত্রাসী আমার ওপর হামলা করে কুপিয়ে আমার বাঁ পা গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। তারা কুপিয়ে আমার ডান হাতের রগ কাটে এবং ভুঁড়ি বের করে ফেলে। এ ঘটনার পরে আমি চিকিৎসাধীন থাকার সুযোগে ওসি বাদল আমার বৃদ্ধ মায়ের স্বাক্ষর নিয়ে তাঁর ইচ্ছে মতো মামলা দায়ের করেন এবং পরবর্তী সময়ে চার্জশিট থেকে মামলার এক আসামিকে বাদ দেন। আমি ৯ মাস বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। বর্তমানে আমি একটি পা হারিয়ে পঙ্গু অবস্থায় জীবনযাপন করছি।

সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমার এই পঙ্গুত্ব হওয়ার পেছনে ওসি নুরুল ইসলাম বাদলের জোরাল ইন্ধন রয়েছে। তিনি মঠবাড়িয়ায় সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করতেন। তাঁর সাহসেই সন্ত্রাসীরা আমাকে কুপিয়ে পঙ্গু করে দিয়েছে। আমি তাঁর বিচার দাবি করছি।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা জাপার সদস্য সচিব মো. বসির আহমেদ হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনার বিষয়ে তুষখালী ইউনিয়নের সাবেক সদস্য সগির মেম্বারের দাবি, ওই ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। পূর্ব শত্রুতার কারণে মামলায় তাঁকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে জড়িত থাকার প্রমাণ না পাওয়ায় চার্জশিট থেকে তাঁর নাম বাদ দিয়েছে পুলিশ।

মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি নুরুল ইসলাম বাদল বর্তমানে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত রয়েছেন। অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, তিনি দায়িত্বে থাকাকালে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়াসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করেছেন। ঘটনার সঙ্গে তাকে জড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করা দুঃখজনক বলে জানিয়েছেন তিনি।
 

আরও পড়ুন