সিলেটে ছাত্রলীগকর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
মামলা করেও শেষ রক্ষা হয়নি আরিফের

নিহত ছাত্রলীগকর্মী আরিফের মায়ের আহাজারি। ছবি: সমকাল
সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৩ | ১৮:২৮ | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩ | ১৮:৩০
সিলেট সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ও ছাত্রলীগকর্মী আরিফ আহমদ (১৯) একাধিকবার হামলা শিকার হন প্রতিপক্ষ গ্রুপের কর্মীদের হাতে। গত বুধবার (১৫ নভেম্বর) হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসা শেষে রোববার বাসায় ফেরেন। পরদিন সোমবার আরিফের মা আঁখি বেগম সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরাণ (রহ.) থানায় নগরীর বালুচর এলাকার বাসিন্দা জুনেদ, আনাছ মিয়া, কুদরত আলী, কালা মামুন, শরীফ, হেলাল ও সবুজ মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেন। কিন্তু সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে আবার হামলার শিকার হন আরিফ। ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষের গ্রুপের কর্মীরা নগরীর শাহী ঈদগাহ টিবি গেট এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করে তাকে।
নিহত আরিফ টিবি গেট বালুচর এলাকার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক ফটিক মিয়ার ছেলে।
হত্যায় জড়িত সন্দেহে মঙ্গলবার পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। এরা হচ্ছেন সোনারবাংলা এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে রনি (২১) ও বালুচর এলাকার কামাল মিয়ার ছেলে মামুন মজুমদার (২৮)। তারা দুজনেই সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন কাউন্সিলর হিরন মাহমুদ নিপুর কর্মী।
ছাত্রলীগ ও আরিফের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে টিবি গেইট ও বালুচর এলাকায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। এর জের ধরে সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে আরিফের উপর হামলা করা হয়। দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে রাস্তায় ফেলে যায় আরিফকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর রাত দেড়টার দিকে আইসিইউতে মারা যান আরিফ। মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বাম হাত, উরু ও পাসহ আরিফের শরীরের ১২টি জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।
আরিফের মা আখি বেগম বলেছেন, ‘সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদ নিপুর নেতৃত্বে আমার ছেলের উপর হামলা করা হয়েছে। রনি, মামুন, হেলালসহ ১৫ থেকে ২০ জন মিলে হামলা করে।’
এ বিষয়ে জানতে কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদ নিপুর সঙ্গে কথা বলতে তার ফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ সমকালকে বলেছেন, ‘অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে আরিফের উপর হামলা করা হয়। রাতেই তিনি মারা যান। খুনে জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম জানিয়েছেন আরিফকে পূর্বপরিকল্পিত খুন করা হয়েছে।’