সাত কোটি টাকার স্বর্ণ চোরাচালান মামলা
মনগড়া তদন্তে চট্টগ্রামে কাঠগড়ায় দুই কর্মকর্তা

.
আহমেদ কুতুব, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৩ | ২২:৩০
চট্টগ্রামে সাত কোটি টাকার স্বর্ণবার চোরাচালান মামলার মনগড়া তদন্ত করে আদালতের কাঠগড়ায় তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে তদারকি কর্মকর্তাও। মামলার তদন্ত নিয়ে এ দুই কর্মকর্তার পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আদালত। এ ধরনের অপেশাদার তদন্ত অপরাধের বিচারহীনতার সংস্কৃতি সৃষ্টি করবে। অপরাধীরা স্বর্ণ চোরাচালানে আরও তৎপর হবে– এমন শঙ্কার কথাও উঠে এসেছে আদালতের আদেশে।
২০২১ সালের ১৮ ডিসেম্বর দুবাই থেকে চট্টগ্রামে আসা বিমান বাংলাদেশের বিজি-১৪৮ বিমানের ১৭-সি সিটের নিচ থেকে ৮৬টি স্বর্ণবার উদ্ধার করা হয়। ১ হাজার ১৯ গ্রাম স্বর্ণবারের দাম প্রায় সাত কোটি টাকা। কিন্তু যে সিটের নিচ থেকে স্বর্ণবার পাওয়া যায়, সেই সিটের যাত্রী মোহাম্মদ বিন তাহমিদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা ছাড়াই মামলার তদন্ত শেষ করে পুলিশ। কোনো আসামিকে শনাক্ত না করে চোরাচালানের ঘটনায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
আলোচিত চোরাচালান মামলাটির তদন্ত করেন পতেঙ্গা থানার এসআই আবদুর রহিম মিয়া। মামলার তদন্ত তদারকি করেন তৎকালীন পতেঙ্গা থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কর্ণফুলী জোন) আরিফ হোসেন। তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার সুপারিশও করেন তদারকি কর্মকর্তারা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগরের পতেঙ্গা থানার এসআই আবদুর রহিম মিয়া বলেন, তদন্তভার গ্রহণ করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, বাদী, সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গুপ্তচর নিয়োগ করে মামলার ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করি। কিন্তু তদন্তকালে মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তিকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছি।
আদালতের পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আদালতের আদেশ নিয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই।
তদারকি কর্মকর্তা মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার আরিফ হোসেনকে বেশ কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
চোরাচালান মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে গত ১৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ ড. জেবুন নেচ্ছার আদালত এ কঠোর আদেশ দেন। ২০২১ সালের ১৮ ডিসেম্বর শাহ আমানত বিমানবন্দরে স্বর্ণবার চোরাচালানের ঘটনায় কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুল জলিল বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন। ২০২২ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ।