হাট ইজারা না নিয়ে খাস আদায়ের নামে লুটপাট
গোড়াই-সখীপুর সড়কের তক্তারচালা হাট
সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৩ | ০৭:৩৬
হাট ইজারা না দিয়ে ‘খাস কালেকশন’-এর নামে চলছে লুটপাট। খাস আদায়ের টাকা সরকারি কোষাগারে নামমাত্র জমা দিয়ে বেশির ভাগই পকেটে ভরছে ইজারাদার সিন্ডিকেট। সখীপুর উপজেলার তক্তারচালা হাট ইজারা থেকে গত বছর ২৮ লাখ টাকা রাজস্ব খাতে জমা হলেও চলতি বছরের ছয় মাসে খাস আদায় হয়েছে মাত্র সোয়া ২ লাখ টাকা। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে আঁতাত করে হাটের খাস আদায়ের টাকা হরিলুট করছে পুরোনো ইজারাদার।
১৪২৯ বঙ্গাব্দে তক্তারচালা হাটের ইজারা মূল্য থেকে সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে ২৮ লাখ টাকা। চলতি ১৪৩০ বঙ্গাব্দের ছয় মাসে ওই হাটের খাস আদায় হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এ বছর সরকার নির্ধারিত ইজারা মূল্য ১৮ লাখ ৫৭ হাজার টাকা, যা গত বছরের মূল্যমানের তুলনায় গত ছয় মাসের গড় মূল্যে ১১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা কম। আগামী ছয় মাসে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা খাস আদায় হতে পারে।
সংশ্লিষ্টদের ধারণা, চলতি বছরে ওই হাটে মোট ৫ লাখ টাকা খাস আদায় হতে পারে। এতে সরকারের বড় অঙ্কের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। তক্তারচালা হাট পরিচালিত হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অধীনে।
অভিযোগ উঠেছে, গত ১৪২৯ বঙ্গাব্দের ইজারাদারই ১৪৩০ বঙ্গাব্দের খাস আদায় করছে। চক্রটি দরপত্র অনুযায়ী ইজারা না নিয়ে দুই-একজন অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশে ‘খাস আদায়ের’ নামে সরকারের রাজস্ব খাতের টাকা লুটপাট করছে।
সখীপুর উপজেলার বৃহত্তম হাট তক্তারচালা। সপ্তাহের শনিবারে এ হাট বসে। প্রতি হাটে কমপক্ষে ৫০-৬০ হাজার টাকার ইজারা আদায় হয়। এ হাট চলতি বছর ইজারার আওতায় না এনে কৌশলে খাস আদায়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে দাঁড়িয়ে থেকে খাস আদায়ের বিধান থাকলেও এ ক্ষেত্রে ওই কর্মকর্তাকে সংযুক্ত রাখা হয়নি। এতে বড় অঙ্কের রাজস্বের টাকা চলে যাচ্ছে সিন্ডিকেটের পকেটে।
চুক্তির মাধ্যমে খাস আদায় করছেন বলে দাবি করেছেন তক্তারচালা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি সাবেক ইজারাদার ও চলতি বছরের খাস আদায়কারী ফরহাদ হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক হাসান মিয়া। তাদের ভাষ্য, আগের চেয়ে আদায় কম হওয়ায় ইজারা নেননি। গত বছর ওই হাটের ইজারা হাসান মিয়ার নামেই বরাদ্দ ছিল।
কথা হয় হাতীবান্ধা ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা সাঈদা নাজনীনের সঙ্গে। সমকালকে তিনি জানান, হাটের খাস আদায়ের জন্য তাঁকে ফোন করেছিলেন ইউএনও। পরে তিনি (ইউএনও) তাঁর কার্যালয়ের লোকজনের মাধ্যমে খাস আদায় করবেন বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আর কিছুই জানেন না বলে দাবি তাঁর।
বিষয়টি জানতে উপজেলা হাট-বাজার খাস আদায় কমিটির সভাপতি ইউএনও ফারজানা আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি। অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য
চেয়ে তাঁকে খুদেবার্তাও পাঠানো হয়; কিন্তু কোনো সাড়া দেননি।
টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম বলেন, অনিয়ম পাওয়া গেলে খতিয়ে দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।