দেড় বছরের কাজ শেষ হয়নি ৫ বছরেও

মদন-তাড়াইল সেতুর কিশোরগঞ্জ অংশে সংযোগ সড়কের কাজ বন্ধ সমকাল
মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৩ | ০০:৪৩
নেত্রকোনার মদন-কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা সংযোগ সড়কের বর্নি নদীতে সেতু নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। দেড় বছরের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি পাঁচ বছরেও। জমি অধিগ্রহণে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও ঠিকাদারের গাফিলতিতে ধীরগতিতে চলছে কাজ। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারসহ শুরু থেকেই নির্মাণকাজে অনিয়ম করছেন ঠিকাদার।
মদন উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তথ্যমতে, মদন-তাড়াইল উপজেলা সংযোগ সড়কের ধানকুনিয়া গ্রামের বর্নি নদীতে একটি সেতু নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। সেতুটির গুরুত্ব অনুধাবন করে দ্রুত দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। কাজটি পায় পিপিএল চ্যালেঞ্জার নামে কিশোরগঞ্জের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের ৮ মার্চ কাজ শুরু করে ৫৪০ দিনের মধ্যে শেষ করার কথা। কিন্তু পাঁচ বছর চলে গেলেও সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, সেতুটির অর্ধেক অংশ কিশোরগঞ্জ জেলায়, অর্ধেক অংশ নেত্রকোনা জেলার সীমানায় পড়েছে। দুই পাড়ের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে শুরু থেকেই জটিলতা সৃষ্টি হয়। তাই নির্মাণকাজ প্রায়ই বন্ধ থাকে। কিশোরগঞ্জ অংশের সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ এখনও বন্ধ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বর্নি নদীর ওপর সেতুর নির্মাণকাজে শুরু থেকেই অনিয়ম করছেন ঠিকাদার। নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। সেতুর কাজ এখনও বাকি রয়েছে। নেত্রকোনার মদন অংশের সংযোগ সড়কে নিম্নমানের ভাঙাচোরা ব্লক বসানো হচ্ছে। তদারকিতে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা থাকায় ঠিকাদার ইচ্ছামতো কাজ করে যাচ্ছেন। এ নিয়ে স্থানীয়রা বারবার প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামিউল হায়দার তালুকদার বলেন, ‘বর্নি নদীর অর্ধেক অংশ মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন, অর্ধেক অংশ কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার ধলা ইউনিয়নের সীমানায়। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতুর নির্মাণকাজ করানো হচ্ছে শুনে আমি নিজে গিয়ে কয়েকবার কাজ বন্ধ করে কর্তৃপক্ষকে খবর দিয়েছি।’
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি কৃত্তিবাস জানান, জমি অধিগ্রহণের সমস্যা থাকায় সময় মতো কাজ শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাড়াইল অংশে জমি অধিগ্রহণ সমস্যা থাকায় কাজ বন্ধ রয়েছে। মদন অংশের সংযোগ সড়কের কাজ চলমান। গাড়ি থেকে নামানোর সময় কিছু ব্লক ভেঙে যায়। এগুলো পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়ালের ভাষ্য, সেতুর কাজ শেষ পর্যায়ে। সংযোগ সড়কে ব্লক বসানোর কাজ চলছে। সংযোগ সড়কে কিছু ভাঙাচোরা ব্লক বসানো হয়েছিল। বিষয়টি জানতে পেরে ব্লকগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে। দুই জেলার সীমান্ত এলাকায় সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় জমি অধিগ্রহণে সময় লেগেছে। তাই চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে।
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ আলম মিয়া জানান, বর্নি নদীর ওপর সেতু নির্মাণ কাজে অনিয়মের খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানকে নিয়ে পরিদর্শন করেছেন। সংযোগ সড়কে ভাঙাচোরা ব্লক বসানো হয়েছে। এগুলো পরিবর্তন করার জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে।