ভূমি রক্ষার দাবি
মধুপুরে সমাবেশ ও মহাসড়ক অবরোধ আদিবাসীদের

আদিবাসীদের মহাসড়ক অবরোধ- সমকাল
মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২১ | ০৭:০৪ | আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২১ | ০৭:০৯
টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়ে গারো-কোচদের ভূমির অধিকার রক্ষা এবং নিজ ভূমি থেকে তাদের উচ্ছেদ না করার দাবিতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বিকেলে সমাবেশ শেষে তারা এক ঘণ্টা টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। পরে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেন।

এর আগে দুপুরে স্থানীয় জলছত্র ফুটবল মাঠে জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ, আচিকমিচিক সোসাইটি, বাগাছাস, গাসু, জিএসএফ, আজিয়া, এসিডিএফ, কোচ আদিবাসী সংগঠন, জলছত্র হরিসভা, সিবিএনসি, ইআইপিএলআর, আবিমা আদিবাসী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন, পীরগাছা থাংআনি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন এবং মধুপুর গড় এলাকার বিভিন্ন গ্রামের গারো সম্প্রদায়ের ছাত্র-ছাত্রী, নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষ মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। ‘আমার ভূমি আমার মা কেড়ে নিতে দেব না’সহ বিভিন্ন স্লোগানে তারা সমাবেশস্থল প্রকম্পিত করে তোলেন।
বক্তারা আরও বলেন, পূর্বপুরুষরা এ গড়াঞ্চলে উঁচু চালা জমিতে জুম চাষ ও নিচু বাইদ জমিতে ধান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এভাবে তারা বংশানুক্রমে এ অঞ্চলে বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি বন বিভাগের সংরক্ষিত বনভূমি উদ্ধারের যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তাতে যুগ যুগ ধরে মধুপুর গড়ের বসবাসকারী গারো ও কোচ সম্প্রদায়ের লোকজন উচ্ছেদ আতঙ্কে ভুগছে।
সমাবেশে আদিবাসী নেতারা বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- আদিবাসীদের স্বত্বদখলীয় জমি জরিপ করে ভূমি চিহ্নিত করা; মধুপুর বনাঞ্চলের সংরক্ষিত, জাতীয় উদ্যান, ইকোপার্ক ঘোষণা বাতিল করা; ১৯৮২ সালের আতিয়া বন অধ্যাদেশ বাতিল করে তাদের রেকর্ড জমির খাজনা নেওয়া বন্ধ আবার চালু করা; তাদের স্বত্বদখলীয় ভূমি স্থায়ী বন্দোবস্তের ব্যবস্থা করা; বন মামলাগুলো ভ্রাম্যমাণ আদালত সৃষ্টি করে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা; সামাজিক বনায়ন বাতিল করে প্রাকৃতিক বন রক্ষার দায়িত্ব তথা কমিউনিটি ফরেস্ট্রি বা গ্রামবন পদ্ধতি চালু করা।
জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন জিএমএডিসির সভাপতি অজয় এ মৃ, মধুপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান যষ্ঠিনা নকরেক, ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উইলিয়াম দাজেল, আচিক মিচিক সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সুলেখা ম্রং, জিএসএফের সাধারণ সম্পাদক লিয়াং রিছিল, বাগাছাসের সভাপতি জন যেত্রা, গাসুর সভাপতি ইব্রীয় মানখিন, কোচ নেতা গৌরাঙ্গ বর্মন, আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ, বেলার প্রতিনিধি গৌতম চন্দ্র চন্দ প্রমুখ।