খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে বরখাস্ত এবং দুই শিক্ষককে অপসারণের আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।

রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বেলা সাড়ে ১১ টায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অধ্যাপক অনির্বাণ মোস্তফা, অধ্যাপক আফরোজা পারভীন অধ্যাপক দিলীপ দত্ত, অধ্যাপক আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরীসহ ১০-১২ জন শিক্ষক অংশ নেন।  

এসময় অধ্যাপক আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, কর্তৃপক্ষ এই বেআইনি সিদ্ধান্ত বাতিল না করা পর্যন্ত আমরা প্রতিদিন এক ঘন্টা কর্মসূচি পালন করে যাবো। একইসাথে সকল শিক্ষককে গ্রুপিং ও দলমত বাদ দিয়ে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি অনুযায়ী এই কর্মসূচির পরিবর্তে অন্য কর্মসূচিও আসতে পারে বলেও জানান তিনি।

একই দাবিতে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ১১-১৩ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতিদ তূর্জ বলেন, তৃতীয় দিনের মতো আমরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। দেশের ছাত্রসমাজ, শিক্ষক, সচেতন নাগরিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেটওয়ার্কসহ অনেকেই আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। তাই তিন শিক্ষককে বরখাস্ত ও অপসারণের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার না করা হলে আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যাবো।

এদিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে বরখাস্ত এবং দুই শিক্ষককে অপসারণের আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তিন শিক্ষকের পক্ষে রোববার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ূয়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপচার্য, রেজিস্ট্রারসহ ১০ জনের কাছে ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান।

নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই তিন শিক্ষকের বরখাস্ত ও অপসারণ আদেশ প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আদালতে প্রতিকার চেয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বরখাস্ত শিক্ষক হলেন বাংলা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক আবুল ফজল। অপসারণ করা দুই শিক্ষক হলেন ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী এবং বাংলা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক শাকিলা আলম।

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, ওই তিন শিক্ষককে ২৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় বরখাস্ত এবং অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়। পরে ২৮ জানুয়ারি এ বিষয়ে সংশ্নিষ্টদের চিঠি দেন রেজিস্ট্রার। ওই চিঠি প্রত্যাহার চেয়ে এ নোটিশ পাঠানো হয়।

নোটিশে শিক্ষকরা আইনি বিভিন্ন ব্যত্যয়ের অভিযোগ ছাড়াও সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত আক্রোশ এবং কোনো তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই শাস্তি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রার অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুস বলেন, আইনি নোটিশ আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। আইনানুগ পক্রিয়া অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।