কক্সবাজারে এক কিশোরীকে মাইক্রেবাসে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কক্সবাজারের ঈদগাঁও থানায় একটি মামলা হয়েছে। পরে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মাইক্রোবাসটির চালকসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলেন- কক্সবাজার সদর উপজেলার খোদাইবাড়ী এলাকার মো. ইদ্রিসের ছেলে জাফর আলম ওরফে খোরশেদ (৫৫) এবং অলিয়াবাদ এলাকার মো. জয়নাল আবেদীনের ছেলে আহম্মদ উল্লাহ (২৬)। আহম্মদ উল্লাহ মাইক্রোবাসটির চালক এবং জাফর আলম ওরফে খোরশেদ ঈদগাঁও মাইক্রোবাস চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক।

ঈদগাঁও থানার ওসি আব্দুল হালিম জানিয়েছেন, রোববার সন্ধ্যায় ওই ঘটনায় ৪ জনকে আসামি করে কিশোরীর নানা এজাহার দায়ের করেন। পরে এটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। ভুক্তভোগী কিশোরী মহেশখালীর। 

মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে ওসি আব্দুল হালিম বলেন, গত ২৮ জানুয়ারি বিকালে ওই কিশোরী পার্শ্ববতী এলাকায় বান্ধবীর ছোট ভাইয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বাড়ি থেকে বের হয়। পথে ধলঘাট এলাকায় স্থানীয় একটি লন্ড্রির দোকানের সামনে পৌঁছালে সাদা একটি মাইক্রোবাস তার সামনে দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে নেমে ৩ ব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে মাইক্রোতে তুলে নেয়। এসময় সে চিৎকার করার চেষ্টা করে। কিন্তু অপরণকারীরা তার মুখে টেপ লাগিয়ে দেয়।

ওসি বলেন, ওই কিশোরীকে নিয়ে রাতে মাইক্রোবাসটি চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডে আসে। সেখানে কিশোরীকে হাত-পা বেঁধে ৩ জন ধর্ষণ করে। পরদিন রাতে মাইক্রোবাসটি ওই কিশোরীকে কক্সবাজারের ঈদগাঁও ফরিদ আহমদ কলেজ মাঠে নিয়ে আসে। সেখানে তারা আবারো তাকে ধর্ষণ করে।

ওসি আব্দুল হালিম বলেন, ওই রাতে কিশোরীকে তুলে আনার বিষয়টি অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনে মাইক্রোবাস চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাফর আলম ওরফে খোরশেদকে জানান। পরে রাতেই কিশোরীকে ঈদগাঁও বাজারের ডিসি রোডে মমতাজ মার্কেটের দু’তলায় মাইক্রোবাস চালক সমিতির অফিসে নিয়ে যান অপহরণকারীরা। সেখানে ওই কিশোরীকে দু’তলার অন্য একটি কক্ষে জোর করে ঢুকানোর চেষ্টা করা হয়। এসময় কিশোরী চিৎকার দিলে বাজারে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা শুনতে পান। পরে পুলিশ এসে জাফর আলম ওরফে খোরশেদকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। এই সময়ে অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে অভিযান চালিয়ে মাইক্রোবাসের চালক আহম্মদ উল্লাহকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তিনি আরও জানান, ওই কিশোরীকে চিকিৎসা ও শারীরিক পরীক্ষার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে তাকে একটি বেসরকারি সংস্থার সেফ হোমে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় কিশোরীর নানা বাদী হয়ে রোববার সন্ধ্যায় ৪ জনকে আসামি করে ঈদগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ঈদগাঁও ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মেহেরঘোনা এলাকার ছাব্বির আহাম্মেদের ছেলে জলাল ওরফে টুকুল্ল্যা (১৯) এবং ইসলামাবাদ ইউনিয়নের খোদাইবাড়ী এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে জাফর আলম (৪০)।

ওসি বলেন- ‘মামলাটি নথিভুক্ত করার পরপরই পুলিশ তদন্ত কাজ শুরু করেছে। মহেশখালীর ধলঘাটায় গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে জেনেছি, মেয়েটির মা মারা গেছে কয়েক বছর আগে। তার বাবা আরেকটি বিয়ে করেছেন। মা মারা যাওয়ার পর ওই কিশোরী কিছুদিন নানার বাড়ি, কিছুদিন খালার বাড়ি, আবার কিছুদিন অন্য নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে থাকে। সম্প্রতি সে বাবার বাড়ি ফেরে।’