কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বিটেশ্বর গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী নাসির মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ রুমান (৮)। স্থানীয় এস আর আদর্শ স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সে। গত মঙ্গলবার শিশু রুমানকে অপহরণ করা হয়েছে, এমন অভিযোগে তার মা রুনা আক্তার দাউদকান্দি থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, সোমবার অপহরণের পর অপহরণকারীরা শিশুটিকে মুক্তি দিতে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছে তার কাছে। টাকা না দিলে ছেলেকে মেরে ফেলবে তারা।

এদিকে থানায় মামলা হওয়ার পর ওই শিশুকে উদ্ধারে তৎপর হয়ে উঠে পুলিশও। বৃহস্পতিবার সকালে অবশেষে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশের সদস্যরা। 

পুলিশ জানায়, অবাক করা ব্যাপার হলো- যেই মা ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে থানায় মামলা করেছেন, সেই মা নিজেই অপহরণ করেছিলেন ছেলেকে। তার উদ্দেশ্য ছিলো প্রবাসী স্বামীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া। এ ঘটনায় মা রুনা আক্তার, ফুপা স্বপন মিয়া, খালা নাসরিন আক্তার ও মামি নুসরাত জাহান লাকিকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে এখন মামলার প্রস্তুতি চলছে।

বৃহস্পতিবার রাতে দাউদকান্দি মডেল থানার ওসি মো.নজরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, প্রবাসী নাসির মিয়ার বোন শাহিনুর বেগম বাদী হয়ে শিশুটির মাসহ অপর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার সকালে তাদেরকে কুমিল্লার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে। আটকরা পুলিশের কাছে প্রতারণার কথা স্বীকার করেছে। তারা চেয়েছিলেন শিশুর প্রবাসী বাবার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে।

তিনি আরও বলেন, গত সোমবার সকালে কথিত অপহরণের পর শিশু রুমানকে প্রথমে তার ফুপা দাউদকান্দির চক্রতলা গ্রামের স্বপন মিয়ার বাড়িতে রাখা হয়। পরদিন মঙ্গলবার শিশুর মা বাদী হয়ে থানায় অপহরণের মামলা করলে মুক্তিপণ চাওয়া মোবাইল নম্বর এবং বাদীর মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করি আমরা। পরে স্বপন মিয়ার বাড়ি থেকে তারা শিশু রুমানকে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে তার খালার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানেও পুলিশ অভিযান চালায়। পরে বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটিকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ যাত্রাবাড়ীর আপন বাস কাউন্টার এলাকা থেকে আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করে। এরপর ঘটনায় জড়িত সকলকে আটক করি।