বাড়ির গেটে দাঁড়িয়ে বন্ধুর সঙ্গে গল্প করছিলেন কলেজছাত্রী। তার ‘অপরাধ’ তিনি গল্প করছিলেন সন্ধ্যা রাতে। এ ঘটনায় স্থানীয় তিন বখাটে অপবাদ দিয়ে ওই ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ছবি তোলে ও ভিডিও ধারণ করে। এরপর ১০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়ে চলে যায়। যাওয়ার আগে বখাটেরা হুমকিও দিয়ে যায়- এ নিয়ে ‘বাড়াবাড়ি’ করলে ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।

নোয়াখালী সদর উপজেলায় গত শুক্রবার ভয়াবহ এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মেয়েটি শনিবার তিনজনের বিরুদ্ধে সুধারাম মডেল থানায় মামলা করেছেন। কিন্তু দু’দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ফলে নিরাপত্তাহীনতায় স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী ও তার পরিবার।

অভিযোগে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেছেন, গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে তিনি বাড়ির গেটে দাঁড়িয়ে তার সহপাঠী এক ছাত্রের সঙ্গে পরীক্ষার সাজেশন নিয়ে কথা বলছিলেন। তার বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। ছোট ভাই বাড়িতে থাকলেও নামাজ আদায় করতে মসজিদে গিয়েছিল। তারা গল্প করার এক পর্যায়ে স্থানীয় বখাটে পুলক মজুমদার, আকবর হোসেন ও রায়হান উদ্দিন এসে ছাত্রী ও তার বন্ধুকে ঘিরে ধরে। তাদের টানা-হ্যাঁচড়া শুরু করে। একপর্যায়ে ওই তিনজন তাদের ধাক্কা দিয়ে ছাত্রীর ঘরে নিয়ে যায়। পরে মেয়েটির বন্ধুকে আলাদা ঘরে আটকে রাখে রায়হান। পুলক ও আকবর মেয়েটিকে তার ঘরে নিয়ে প্রথমে এলোপাতাড়ি মারধর এবং পরে বিবস্ত্র করে তাদের সঙ্গে ছবি তোলে ও ভিডিও ধারণ করে। এ সময় তারা ৫০ হাজার টাকা চাঁদাও দাবি করে। ওই ছাত্রী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে দুই বখাটে তার শ্নীলতাহানির চেষ্টা চালায়।

মামলায় ওই ছাত্রী পুলক, আকবর ও রায়হানকে আসামি করেছেন। ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা ছাড়া ভিডিও ফুটেজ ও ছবি উদ্ধার করা সম্ভব নয়। তারা যে কোনো সময় ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দিতে পারে। এ নিয়ে তিনি শঙ্কিত।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন বলেন, মামলার তিন নম্বর আসামি বিদেশে পালানোর চেষ্টা করছে বলে খবর মিলেছে। ইমিগ্রেশন পুলিশের সহযোগিতায় তাকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।