শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) রেজিস্ট্রার ডা. রবিন চন্দ্র হালদার, তার স্ত্রী রাখি দাসসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

শনিবার সকালে বরিশালের উজিরপুর মডেল থানায় মামলাটি করেন নির্যাতনের শিকার নিপা বাড়ৈর (১১) কাকা তপন বাড়ৈ। নিপা ওই চিকিৎসকের ঢাকার বাসায় গৃহকর্মী ছিল।

উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন নিপা শুক্রবার সকালে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়। শনিবার সকালে তাকে পাশের আগৈলঝাড়া উপজেলার আস্কর গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

নিপা উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের জামবাড়ি গ্রামের মানসিক প্রতিবন্ধী ননী বাড়ৈর মেয়ে। ডা. রবিন চন্দ্রের বাড়িও একই উপজেলায়; ওটরা ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামে।

উজিরপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মাহতব হোসেন বলেন, শিশুটিকে নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলায় ওই চিকিৎসক দম্পতি এবং বাসুদেব নামে একজনকে আসামি করা হয়েছে।

জানা গেছে, বাসুদেবের মাধ্যমেই ছয় মাস আগে নিপাকে ডা. রবিনের বাসায় কাজে দেওয়া হয়েছিল। তার বাড়িও উজিরপুরে।

নিপার অভিযোগ, ছোটখাটো অজুহাতে তাকে বেদম মারধর করতেন ডা. রবিনের স্ত্রী রাখি দাস। ২১ ফেব্রুয়ারি মারধরের একপর্যায়ে তার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন রাখি। এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি তাকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আহত অবস্থায় গত বুধবার গভীর রাতে নিপাকে বাড়ি থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পুলিশ।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শওকত আলী বলেন, শিশুটিকে ভর্তির পর থেকেই নানা লোক এসে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। শুক্রবার ভোর থেকে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়।

উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান বলেন, গোপন সংবাদ পেয়ে নিপাকে তার চাচার মামা শ্বশুর বিমল বাড়ৈর আগৈলঝাড়ার আস্কর গ্রামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে সে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে ডা. রবিন চন্দ্র হালদারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে তার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।