বগুড়া জেলা কারাগার
ধারণক্ষমতার ৩ গুণ বন্দি থাকতে হচ্ছে বারান্দায়
ছবি: সংগৃহীত
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৩ | ০৭:৩৭
বগুড়া জেলা কারাগারের ধারণক্ষমতা ৭৮৫ জনের, তবে বন্দি আছে ২ হাজার ৪৩০। সক্ষমতার তিন গুণ বন্দি থাকায় অনেকের ঠাঁই হয়েছে বারান্দায়। শীতের রাতে বারান্দায় থাকায় অনেক বন্দিই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া অন্যান্য সুবিধাও কমেছে। তবে জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, কোনো সংকট হয়নি।
জেল সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশে সংঘর্ষ, এর পর দলটির অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি ঘিরে বগুড়ায় কয়েকশ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই এখন রয়েছেন জেলা কারাগারে। আগে থেকেই অতিরিক্ত বন্দি থাকা কারাগারটিতে তাই চাপ বেড়েছে। কারাগারের ছয় ভাগের এক ভাগই এখন রাজনৈতিক বন্দি। এ ছাড়া মাদক মামলার আসামি আছে অর্ধেক। তবে মাদক মামলায় অনেকের জামিন হলেও রাজনৈতিক মামলার জামিন প্রায় বন্ধ। রাজনৈতিক বন্দির সংখ্যাও বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এতে চাপ কমছে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বন্দির স্ত্রী জানান, তাঁর স্বামী বিএনপি সমর্থক। নাশকতার একটি মামলায় গত ২ নভেম্বর গ্রেপ্তার হন। এখন পর্যন্ত তিনবার আবেদন করা হলেও আদালত জামিন দেননি। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামীকে শীতের মধ্যে বারান্দায় রাখা হয়েছে। এতে তিনি বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। একই ধরনের অভিযোগ জানিয়েছেন অন্য বন্দির স্বজনরাও।
এদিকে নাশকতার মামলায় জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক নাজমা আক্তারকে গত ৩ নভেম্বর এলএলবি পরীক্ষা শেষে কেন্দ্র থেকেই গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। প্রায় এক মাসেও তিনি জামিন পাননি। তাঁর আইনজীবী রহিমা আক্তার মেরি বলেন, নাজমা এলএলবির ইমপ্রুভ পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। ১ ডিসেম্বর তাঁর আরেকটি বিষয়ে পরীক্ষা আছে। ২১ নভেম্বর জামিনের আবেদন করা হলেও পাননি। এতে তাঁর পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
গত ২৮ অক্টোবর থেকে জেলায় বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৩৩টি। এতে আসামি করা হয়েছে আড়াই হাজারের ওপরে। গতকাল মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩৪৮ জন। বিএনপির অভিযোগ, প্রতিদিনই গ্রেপ্তার চলছে।
জেলা বিএনপির সহসভাপতি আইনজীবী হামিদুল হক চৌধুরী হিরু বলেন, জেলায় বিএনপি নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে ঢোকানো হচ্ছে। মাদক মামলার আসামিদের জামিন হলেও রাজনৈতিক মামলায় জামিন হচ্ছে না।
জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল মতিন বলেন, কিছু মামলায় জামিন হচ্ছে।
বগুড়ার জেল সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, স্থান সংকুলানের না হওয়ায় কিছু বন্দিকে বারান্দায় রাখতে হচ্ছে। মাদক মামলার আসামি বেশি।